শবরীমালা মন্দিরে রজঃস্বলা মহিলাদেরও প্রবেশাধিকার আছে। গত ১৮ জুলাই ২০১৮ সালের সেই সুপ্রিম কোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন হয়। সেই মামলায় বৃহস্পতিবার ছিল রায়দান। কিন্তু এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বেঞ্চ রায়দান নিয়ে ৩-২ ভাগে বিভক্ত হয়। বিচারপতি চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি নরিমান ভিন্ন রায় দেন। বাকি ৩ সদস্য প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি ইন্দু মালহোত্রা ও বিচারপতি খনিলকর ভিন্ন মত পোষণ করেন। এরপর এই রায়কে ৭ বিচারপতির বেঞ্চে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন প্রধান বিচারপতি। তবে এটাও জানিয়ে দেওয়া হয় ওই বেঞ্চ কোনও রায় দানের আগে পর্যন্ত আগের রায় বহাল থাকবে। অর্থাৎ সব বয়সের মহিলাই শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশাধিকার পাবেন।
প্রত্যেক মহিলাও ঈশ্বরের সৃষ্টি। তাহলে কেন তাঁদের পুজো দেওয়ার অধিকারের মধ্যে বিভাজন থাকবে? মহিলাদের পুজো দেওয়ার অধিকার সাংবিধানিক অধিকার। তাছাড়া যখন জনসাধারণের জন্য একটি মন্দির খোলা হয়েছে তখন সেখানে যে কেউ পুজো দিতে যেতে পারেন। কোনও মহিলাকে মন্দিরে পুজো দিতে না দেওয়া তাঁর সাংবিধানিক অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে। কেরালার শবরীমালা মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সের মহিলাদের প্রবেশে নিষেধের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একগুচ্ছ আবেদনের ভিত্তিতে গত ১৮ জুলাই ২০১৮-তে এমনই জানিয়েছিল শীর্ষ আদালতের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে গঠিত ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। এই রায়ের পর শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশে যে কোনও বয়সের মহিলাদের আর আইনি বাধা ছিলনা। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তকে পুনর্বিবেচনার জন্য সুপ্রিম কোর্টে ফের আবেদন জমা পড়ে।
১৯৯১ সালে কেরালা হাইকোর্ট একটি মামলার প্রেক্ষিতে রায় দিয়েছিল প্রাচীন শবরীমালা মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়স্ক মহিলারা প্রবেশ করতে পারবেন না। কারণ তাঁরা ওই বয়ঃসীমায় ঋতুমতী থাকেন। তা নিয়ে সমাজের নানা স্তর থেকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একগুচ্ছ আবেদন জমা পড়ে। তারপরই শবরীমালা মন্দিরে সব বয়সের মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে মামলা শুরু হয়েছিল। এদিকে এদিন আগের রায়ই আপাতত বহাল থাকায় সেখানে ৩৬ জন মহিলা প্রবেশ করার জন্য অনলাইনে আবেদন জমা করেছেন। প্রসঙ্গত আগামী রবিবার থেকে ২ মাসের জন্য খুলছে শবরীমালার দরজা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা