পাটনার গলি থেকে বলিউড, স্বপ্নের সফর শেষ হল অসময়ে
পাটনার গলির ছেলে সুশান্ত সিং রাজপুত পৌঁছেছিলেন বলিউডের তারকার জগতে। তাঁর এই যাত্রায় কখনও থেমে যাননি তিনি।
পাটনা : ১৯৮৬ সালে বিহারের পাটনায় জন্ম সুশান্ত সিং রাজপুতের। পাটনার সেন্ট কারেনস হাই স্কুলে পড়াশোনা। মেধাবী ছাত্র হিসাবে পরিচিত ছিলেন স্কুলে। শিক্ষকদের প্রিয় ছাত্র ছিলেন। ভালবাসতেন অবসর সময়ে ক্রিকেট খেলতে। এটাই ছিল সুশান্ত সিং রাজপুতের স্কুল জীবনের পরিচয়। পাটনার গলিতেই হেসে খেলে বড় হয়েছেন তিনি। সব সময় হাসিখুশি প্রাণ চঞ্চল এক কিশোর হিসাবে পরিচিত ছিলেন স্কুল থেকে পাড়া সর্বত্র। সেই ছেলেটা ৩৪ বছর বয়সে আত্মঘাতী হয়েছেন শুনে হতবাক তাঁর স্কুলের শিক্ষকরা। বিশ্বাস করতে পারছেন না তাঁরা।
পাটনায় স্কুল জীবন শেষ করে উচ্চশিক্ষা নিতে দিল্লি পাড়ি দেন সুশান্ত। দিল্লির কুলাচি হংসরাজ মডেল স্কুলে পড়া শুরু করেন। তারপর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যান দিল্লি কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এ। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সুশান্ত কিন্তু ওই পেশায় যাননি। তিনি যোগ দেন নাচের ক্লাসে। শুরু করেন তালিম। ব্যাকগ্রাউন্ড ডান্সার হিসাবে জীবন শুরু করে খুব দ্রুত সামনে আসতে থাকেন সুশান্ত।
২০০৮ সালে ‘কিস দেশ মে হ্যায় মেরা দিল’ নামে একটি সিরিয়াল দিয়ে ছোট পর্দার জীবন শুরু। এই সিরিয়ালে তাঁকে সকলেই পছন্দ করতে শুরু করেন। তবে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পান ‘পবিত্র রিশতা’ নামে সিরিয়ালের জন্য। সিরিয়ালের দুনিয়া ছেড়ে ২০১৩ সালে চলে আসেন বড় পর্দায়। তাঁর প্রথম সিনেমা ‘কাই পো চে’। প্রথম সিনেমাতেই বাজিমাত। তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি না ভুলতে পারা হাসির সুশান্ত সিং রাজপুতকে।
কাই পো চে-র পর দ্বিতীয় সিনেমা ‘শুধ দেশি রোমান্স’। ফের উজ্জ্বল উপস্থিতি। সফল হয় সিনেমা। দ্রুত বলিউডের প্রথমসারির নায়কদের দলে জায়গা পেয়ে যান সুশান্ত। ২০১৪ সালে অভিনয় করেন ‘পিকে’ সিনেমায়। ২০১৫ সালে তাঁর ‘ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সি’ মুক্তি পায়। তবে সুশান্তকে খ্যাতির শিখরে নিয়ে যায় মহেন্দ্র সিং ধোনির বায়োপিক। ২০১৬ সালে এই সিনেমায় ধোনির চরিত্রে অভিনয় করে তাক লাগিয়ে দেন সুশান্ত।
তার পরের বছর ২০১৭ সালে ‘রাবতা’ বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। ২০১৮ সালে ‘কেদারনাথ’ খুব বেশি বক্স অফিস দিতে পারেনি। ২০১৯ সালে ফের ধাক্কা। ‘সোনচিড়িয়া’ সিনেমাটি বক্স অফিসে বড় ধাক্কা খায়। অবশ্য ‘ছিছোড়ে’ করে কিছুটা হলেও ফের ঘুরে দাঁড়ান তিনি। ‘দিল বেচারা’ নামে একটি সিনেমার পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছিল। তারমধ্যেই লকডাউন। যে ছেলেটা ছিছোড়ে-তে জীবনে বেঁচে থাকার কথা বলেছিল, সেই শেষ হয়ে গেল মাত্র ৩৪ বছর বয়সে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা