চলে গেলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা সুষমা স্বরাজ। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। মঙ্গলবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তাঁকে দ্রুত দিল্লির এইমসে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসকেরা সিপিআর দিয়ে তাঁর হৃৎস্পন্দন ফেরানোর সবরকম চেষ্টা চালান। কিন্তু ফল হয়নি। রাত ১০টা নাগাদ তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। খবর পাওয়ার পরই হাসপাতালে ছুটে যান বিজেপির কার্যনির্বাহী সভাপতি জেপি নাড্ডা, কেন্দ্রীয়মন্ত্রী রাজনাথ সিং, প্রকাশ জাভড়েকর, নিতিন গডকরী সহ বিজেপি নেতারা।
সুষমা স্বরাজের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একের পর এক ট্যুইট বার্তায় তিনি লেখেন, সুষমা স্বরাজ একজন উচ্চমানের প্রশাসক ছিলেন। যে মন্ত্রকের দায়িত্ব নিয়েছেন সেখানেই তিনি সাফল্যের সঙ্গে কাজ করেছেন। অন্য দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের উন্নতিতে খুব বড় ভূমিকা ছিল তাঁর। তাঁর মৃত্যুতে ভারতীয় রাজনীতির এক বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায়ের সমাপ্তি হল। দেশের দরিদ্র শ্রেণির উত্থানে সুষমা স্বরাজের কাজ মনে থাকবে। প্রসঙ্গত সুষমা স্বরাজ মোদী মন্ত্রিসভা ১-এ বিদেশমন্ত্রী হিসাবে কাজ করেছেন। মন্ত্রী থাকাকালীন বিদেশে সমস্যায় পড়া ভারতীয়দের সাহায্য করতে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা গেছে তাঁকে। ট্যুইট করে বিদেশে পরিজনের সমস্যার কথা জানালেও কাল বিলম্ব না করে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা গেছে সুষমা স্বরাজকে।
শারীরিক কারণে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে তিনি লড়বেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছিলেন সুষমা স্বরাজ। লড়েনওনি। অসুস্থ থাকায় তাঁকে বড় একটা দেখাও যাচ্ছিলনা। মন্ত্রী থাকাকালীনই তিনি কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। ২০১৬ সালে তাঁর কিডনি ট্রান্সপ্লান্টও হয়। তারপর সুস্থই ছিলেন। বিদেশমন্ত্রী হিসাবে নিজের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এদিন মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগেও ট্যুইট করে জম্মু কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।
৭ বার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন সুষমা স্বরাজ। দাঁড়াতেন বিদিশা কেন্দ্র থেকে। এছাড়া জীবনে ৩ বার বিধায়কও হয়েছিলেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসাবেও কাজ করেন সুষমা। ১৯৯৮ সালের ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সুষমা স্বরাজ। তাঁর স্বামী স্বরাজ কৌশল হারালেন স্ত্রীকে, মেয়ে বাঁসুরী হারালেন মাকে। ১৯৫২ সালে তৎকালীন পঞ্জাবের আম্বালায় জন্মগ্রহণ করেন সুষমা স্বরাজ। অধুনা যা হরিয়ানার অন্তর্গত। ছাত্রাবস্থা থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি হয়। ১৯৭৭ সালে হরিয়ানা মন্ত্রিসভায় জায়গা পান তিনি। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৫ বছর। তারপর আর তাঁকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। আজীবন ভারতীয় জনতা পার্টির একনিষ্ঠ সদস্য হয়ে ছিলেন সুষমা স্বরাজ। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা