আজব কাণ্ড, মহানন্দে জুতো চিবিয়ে খাচ্ছেন মানুষ
জুতো, ব্যাগ কোন পাগলে খায়। আবার এত সুন্দর শিল্পকলাকে পেটে ঢুকিয়ে শিল্পীদের কাজের মর্যাদাহানি করতে আবার মন চায়না অনেকেরই।
আসুন, দেখুন আর কামড় বসান হাই হিল জুতোয়। স্বাদ নিন পৃথিবীর অন্যতম সেরা খাবারের। পকেটে যদি আরেকটু বেশি রেস্ত থাকে, তাহলে চেখে দেখতে পারেন ভ্যানিটি ব্যাগও। নিশ্চিত, এক কামড়ে তৃপ্ত হবে না মন। আরও কয়েকটা ব্যাগ আর জুতো না খেয়ে ছাড়তেই পারবেননা দোকান।
ভাবছেন, মাথা খারাপ হয়ে গেল নাকি! জুতো, ব্যাগ কোন পাগলে খায়! আরে মশাই, খায় খায়! মার্কিন মুলুকের টেক্সাসের শহর হিউস্টনের বাসিন্দারাই তো জুতো আর ব্যাগ খেতে ভারি ভালবাসেন। মহানন্দে খাচ্ছেন। যাকে বলে জমিয়ে খাচ্ছেন।
আর তাঁদের সেই পছন্দের লোভনীয় খাবার সরবরাহ করছে বিখ্যাত চকোলেট প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘ক্যাকাও অ্যান্ড কার্ডামম’। অদ্ভুত উদ্ভট আকারের চকোলেট বার তৈরিতে যাদের জুড়ি মেলা ভার।
চকোলেট বলতে সকলের চোখের সামনে কি ভেসে ওঠে? আয়তকার বা লজেন্সের মত দেখতে একটি গাঢ় বা হাল্কা বাদামী রঙের সুস্বাদু খাদ্য। চিরাচরিত সেই ধারণাতেই বড়সড় আঘাত হেনেছে ‘ক্যাকাও অ্যান্ড কার্ডামম’। চকোলেটের স্বাদ আর চেহারা, দুয়ের ক্ষেত্রেই বিপ্লব ঘটিয়েছে এই সংস্থা।
সাধারণ মানুষের চোখ চকোলেটকে সাধারণ আকারে দেখতে অভ্যস্ত। সেই গতে বাঁধা অভ্যাস আমূল পাল্টে গেছে পৃথিবীর অত্যন্ত জনপ্রিয় চকোলেট প্রস্তুতকারী সংস্থার চমকদার কেরামতিতে। সেই জাদুপ্রক্রিয়ায় দরকার তরল গরম চকোলেটের স্রোত আর ফাইবারের ছাঁচ। যা আকৃতিতে স্টাইলিশ হাইহিল জুতো বা ব্যাগের মত।
সেই ছাঁচে ধীরে ধীরে তরল চকোলেট ঢেলে প্রথমে তাকে নির্দিষ্ট আকৃতি দেওয়া হয়। তারপর ছাঁচ কেটে বার করে আনা হয় জুতো বা ব্যাগের মত দেখতে চকোলেট বারকে। এরপর ভোজ্য রং দিয়ে বেগুনি, নীল, লাল, ধূসর ইত্যাদি নানা রঙে রাঙিয়ে তোলা হয় বারগুলিকে।
চিকচিক করে এমন একধরনের উজ্জ্বল ভোজ্য পদার্থ দিয়ে শেষ হয় রাশি রাশি চকোলেটের গ্রুমিং। তারপর তাদেরকে সুন্দর করে সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখা হয় দোকানের কাচের শোকেসে।
গন্ধ বর্ণ স্বাদ অনুসারে যার একেকটার একেকরকম দাম। ৫০ ডলার থেকে মোটামুটি দাম শুরু। এছাড়া আরও নানা ছাঁচের চকোলেট বানানোতেও ভালোই হাতযশ আছে ‘ক্যাকাও অ্যান্ড কার্ডামম’-এর।
এত সুন্দর শিল্পকলাকে পেটে ঢুকিয়ে শিল্পীদের কাজের মর্যাদাহানি করতে আবার মন চায়না অনেকেরই। তাই তাঁরা চকোলেটগুলিকে হয় দূর থেকে দেখেই জিভকে পরিতৃপ্ত করেন। কেউ আবার জুতো বা ব্যাগ চকোলেট কিনে নিয়ে গিয়ে বাড়িতে সেগুলিকে সযত্নে সাজিয়ে রাখেন অতিথিদের তাক লাগিয়ে দেওয়ার জন্য।
আবার অনেক ক্রেতা ভাবেন, ইশ, শেষে কিনা জুতো চকলেট খেতে হবে। সেই ভয়েই তাঁরা চকোলেট দেখাতেই ক্ষান্ত হন। খাবার দিকে পা বাড়ান না। জুতো বা ব্যাগ ভক্ষণ থেকে শতহস্ত দূরেই থাকতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন তাঁরা।
তাহলে কি করবেন ভাবছেন? জুতো বা ব্যাগ চকোলেট খাবেন? নাকি দেখবেন? তবে যাঁরা খাচ্ছেন তাঁরা কিন্তু বেজায় খুশি। কড়মড় করে চিবিয়ে নিমেষে সাবাড় করে দিচ্ছেন হাইহিল জুতো বা ভ্যানিটি ব্যাগ।