World

মিশন সমাপ্ত, অবশেষে গুহামুক্ত ১২ ফুটবলার ও কোচ

গুহার ভিতর ভরেছে জলে। বাইরে বার হওয়ার কোনও পথ নেই। বাইরে অঝোরে বৃষ্টি হয়েই চলেছে। ক্রমশ গুহা ভরে উঠছে কালো জলে। খাবার নেই। জল নেই। অক্সিজেনও শেষ হওয়ার উপক্রম। এই অবস্থায় গুহার মধ্যে একটা ফাঁকা অংশে বসে মৃত্যুর দিন গুনছিল থাইল্যান্ডের একটি ফুটবল দলের ১২ কিশোর খেলোয়াড় ও তাদের কোচ। থাইল্যান্ডের লুয়্যাং ন্যাং গুহায় আটকে পড়ার পর কার্যত বাঁচার আশাই ছেড়ে দিতে বসেছিল তারা। সিনেমায় এমন দৃশ্য দেখে, এমন অসহায় অবস্থা দেখে অনেকেই ভীত হয়েছেন। আতঙ্কিত হয়েছেন। সিনেমার পর্দায় সেই ছবি যদি আতঙ্ক ধরাতে পারে, তবে এদের অবস্থা কী হয়েছিল তা অনুমেয়!

গত ২৩ জুন হারিয়ে যাওয়ার পর অবশেষে তাদের গুহায় আটকে পড়ার খবর মেলে। তাদের উদ্ধার করতে উঠেপড়ে লাগে থাই প্রশাসন। কিন্তু গুহার কাছে পৌঁছে তারা বুঝতে পারে এ কাজ নেহাত সহজ নয়। আটকে পড়া সকলকে উদ্ধার করার সময় তাদের ডুব সাঁতার দিতে হবে, ফাটলের মাঝখান দিয়ে গলতে হবে, দুর্গমতম জায়গা পার করতে হবে মনের জোরে। যে কোনও মুহুর্তে উদ্ধার করতে গেলে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। অবশেষে চিন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে আসে। তাদের বিশেষজ্ঞ ডুবুরিদের কাজে লাগানো হয় উদ্ধারে। উদ্ধারকাজ শুরুর আগে সবদিক খতিয়ে দেখে পরিকল্পনা পাকা করা হয়। যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে। তারপর গত ৩ দিন ধরে চলে অপারেশন। এসময়ে প্রবল বৃষ্টি হলেও একটাই বাঁচোয়া ছিল যে গুহা আর জলে ভরছিল না। তাছাড়া পাম্প করে জল বারও করে দেওয়া হচ্ছিল।


প্রথম দিনে ৪ জন, দ্বিতীয় দিনে ৪ জনকে বার করে আনা হয়। তখনও গুহার মধ্যে ছিল ৫ জন। তাদের মঙ্গলবার অতি সন্তর্পণে বার করে আনা হয়। সকলে সুস্থ অবস্থায় বেরিয়ে আসায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন উদ্ধারকারী থেকে প্রশাসন। এমন দুর্গমতম গুহা থেকে যে তাদের বার করা গেছে এটাই অনেকে এখনও বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না। উদ্ধার ১২ কিশোর ও তাদের কোচের চিকিৎসা চলছে। সকলের উদ্ধার হওয়ার খবর দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়া মারফত গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।


Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button