মনের মানুষের সঙ্গে অবশেষে গাঁটছড়া বাঁধলেন ‘লোমশ মানবী’। ‘আদিম মানব’ শব্দটির উচ্চারণ মাত্র চোখের সামনে কি ভেসে ওঠে? লোমশ বলিষ্ঠ চেহারার ‘শিম্পাঞ্জি’-র মত দেখতে মানুষ। যার শরীর সামনের দিকে একটু ঝুঁকে রয়েছে। আর গা ভর্তি লম্বা লম্বা চুল। বিবর্তনের পথ ধরে আজ মানুষ পেয়েছে তার আধুনিক পরিপাটি রূপ। তবে মানুষের সেই স্বাভাবিক রূপ থেকে বঞ্চিত থাইল্যান্ডের মেয়ে সুপত্রা সাসুফান।
প্রকৃতির কি নিষ্ঠুর পরিহাস! জন্মের কিছুদিন পর থেকেই সুপত্রার সারা শরীর জুড়ে গজিয়ে উঠতে থাকে বনমানুষের মত দীর্ঘাকার লোম। অভিশাপের মত জীবনে আবির্ভাব হওয়া সেই রোগ উপশম করতে ছোট্ট সুপত্রাকে নিয়ে অভিভাবকরা ছুটে যান চিকিৎসকের কাছে। জানা যায়, সুপত্রা বিরল ‘অ্যাম্ব্রাস সিনড্রোম’ বা ‘ওয়্যারউলফ সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত। জিনের গঠনগত ত্রুটির কারণেই সুপত্রার শরীরে লোমের এই অস্বাভাবিক প্রাদুর্ভাব বলে জানা যায়। লেজার রশ্মির সাহায্য নেওয়া হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। একসময় সুপত্রাকে তাঁর মুখের অস্বাভাবিকত্বের জন্য নানাভাবে অপদস্থও হতে হয়। এলাকায় তাঁর নামই হয়ে যায় ‘উলফ গার্ল’। ২০১০ সালে সবথেকে লোমশ মেয়ে হিসেবে গিনেস বুকে নাম ওঠে সুপত্রার।
তবে তাঁর সেই মাত্রাতিরিক্ত লোম বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি ব্যক্তিগত জীবনে। পরিবার, বন্ধু ও বহু মানুষের ভালবাসা তো তিনি পেয়ে আসছিলেনই। এবারে মনের মানুষের সঙ্গে ঘর বাঁধার স্বপ্নটাও পূরণ হল ১৭ বছরের সুপত্রার। আর তারপর থেকেই এখন নিয়মিতভাবে শরীরের অতিরিক্ত লোম কাটা শুরু করেছেন সুপত্রা বলে জানিয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।