ঠিকানা এবার মৃত্যু রেস্তোরাঁ, মেনুতে আছে জন্ম, বৃদ্ধ, যন্ত্রণা, অসুস্থতা ও মৃত্যু
ঢোকার মুখেই ভোজন রসিকরা জেনে যাচ্ছেন তাঁদের ডেথ টাইম। চারপাশে নজর বোলাতেই চোখে পড়ে মৃত্যুপুরীর বিষণ্ণতা। কোণায় কোণায় রাখা কফিন।
একপেট খিদে নিয়ে রেস্তোরাঁয় ঢুকতেই হাতে আসে মেনুকার্ড। যার যাতে জিভে জল আসে, সেইসব খাবারের অর্ডার জমা পড়ে ওয়েটারের কাছে। কারোর মন আগে চেখে নিতে চায় চটপটা ‘স্টার্টার’।
কারোর আবার রসনা শুরুতেই হামলে পড়ে ‘মেন কোর্স’-এর লোভনীয় পদে। সমস্ত বাহারি পদের জন্য তাই মেনুকার্ডে রাখা হয় কতকগুলি বিভাগ। যেমন – ‘জন্ম’, ‘বৃদ্ধ’, ‘যন্ত্রণা’, ‘অসুস্থতা’, ‘মৃত্যু’।
নিশ্চয়ই এবার ভাবতে বসলেন, এ কেমন ছন্নছাড়া কথা! মেনুকার্ডে জীবনে তো এমন অদ্ভুতুড়ে ‘সেকশন’ চোখে পড়েনি! আরে মশাই, থাইল্যান্ডের ‘কিড-মাই ডেথ ক্যাফে’-তে গেছেন? সেখানে গেলেই বুঝবেন কোন জগতে এসে পড়েছেন! অভিনব এই ক্যাফের থিমই হল ‘মৃত্যু’।
আসলে জন্ম থেকে মৃত্যুর মাঝেই গোটা মানব জীবনচক্র। এই সংক্ষিপ্ত সময় পরিসরটুকুই মানুষকে সুযোগ করে দেয় ইচ্ছাপূরণের। তারপর মৃত্যু। ফুরিয়ে যায় সব আকাঙ্ক্ষা, বিলাসিতা, ভোজন আসক্তি, চাওয়া-পাওয়া।
জীবনের সেই চরম সত্যকে বেশিসংখ্যক মানুষের কাছে তুলে ধরাই ছিল ক্যাফে মালিকের উদ্দেশ্য। সেই উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়নের জন্য ঢেলে সাজানো হয়েছে কিড-মাই ডেথ ক্যাফে-কে।
ক্যাফেতে ঢোকার মুখেই ভোজন রসিকরা জেনে যাচ্ছেন তাঁদের ‘ডেথ টাইম’ অর্থাৎ মৃত্যুর সময়। থুড়ি, অদ্ভুত রেস্তোরাঁয় প্রবেশের নির্ধারিত সময়কাল।
তারপর ক্যাফেতে ঢুকে চারপাশে নজর বোলাতেই চোখে পড়ে মৃত্যুপুরীর বিষণ্ণতা। যেদিকে চোখ যায়, শুধু কালো রং। ইচ্ছা করেই গভীর কালো রঙে রাঙানো। মৃত্যুর আভাসকে নিবিড়তর করে তোলার প্রয়াস।
রেস্তোরাঁর কোণায় কোণায় রাখা কফিন। বসার আসনে স্বমহিমায় আসীন মানব কঙ্কাল। ইতিউতি ছড়িয়ে মরণের বার্তা। যা মনে করিয়ে দেয় ‘মরণের পর সবই ফেলে যেতে হবে।’
এখানেই শেষ নয়। একেবারে মৃত্যুর তালুক থেকে ঘুরে আসতে চাইলে বেশ কিছু মুহুর্ত কফিনে কাটিয়ে আসতে পারেন রেস্তোরাঁয় আসা অতিথিরা। সেক্ষেত্রে আছে বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা।
সব মিলিয়ে বেঁচে থেকেও মৃত্যুর মুখে টাকা দিয়ে ঘুরে আসার মহাআয়োজন। যে আয়োজনে সাধ করে ঢুঁ মারতে পিছপা হচ্ছেন না জীবনবিলাসীরা।