Entertainment

প্রতিটি অনুষ্ঠানের আগেই বাজার ছুটতে হয় ওঁদের, আনাজ কিনলে তবেই হয় শো

পৃথিবীতে আশ্চর্যের শেষ নেই। যেমন ওঁরা আনাজে ডুবে থাকেন। খাওয়ার জন্য নয়। সুরের জন্য। প্রতি অনুষ্ঠানের আগে আসে গাজর, কুমড়ো, শসা, বাঁধাকপি এবং এমন নানা আনাজ।

গান বাজনার অনুষ্ঠান তো পৃথিবীর সব প্রান্তেই হয়। সেসব অনুষ্ঠানে কেউ একাই তাঁর শিল্পসত্ত্বাকে তুলে ধরেন। কোথাও বা দলবেঁধে। কিন্তু এঁদের কাউকে অনুষ্ঠানের আগে বাজার ছুটতে হয়না।

বাজারে গিয়ে আলু, পটল, বেগুন, কুমড়ো, বাঁধাকপি, গাজর এবং এমন নানা ধরনের আনাজ কেনার সঙ্গে বাড়িতে রান্নাবান্নার সম্পর্ক থাকতে পারে, কিন্তু একটি গান বাজনার শোয়ের সম্পর্ক কি! সম্পর্ক কিন্তু রয়েছে। এতটাই রয়েছে যে প্রতিটি শোয়ের আগে তাঁদের বাজার ছুটতেই হয়। আনাজ কিনতে না পারলে শো বাতিল!


শুরুটা ১৯৯৯ সালে অস্ট্রিয়ায়। গানবাজনার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন এক জায়গায় জড়ো হয়ে ভাবছিলেন নতুন কিছু করার কথা। দর্শকদের নতুন সুরে অভিভূত করার কথা। সেই সময়ই স্যুপ খাওয়ার সময় আচমকা একজনের মাথায় খেলে যায় একটা আইডিয়া।

শুরু হয় পরীক্ষা নিরীক্ষা। আনাজ দিয়ে সুর তোলার প্রচেষ্টা ক্রমে আশার আলো দেখাতে থাকে। গাজর ফুটো করে, বাঁধাকপির পাতা ছিঁড়ে, কুমড়োর ওপর হাতে তাল ঠুকে, ছোট লাঠি দিয়ে ছোট গোটা লাইটের গায়ে আলতো টোকা মেরে এবং অন্যান্য আনাজ থেকে এভাবে যে শব্দ বার হতে থাকে, সেই সব শব্দকে একটি বিশেষ তালে ছন্দে মিলিয়ে ফেলেন তাঁরা।


তৈরি হয় দ্যা ভেজিটেবল অর্কেস্ট্রা। যারা এরপর তাদের এই নতুন আনাজ দিয়ে সুর তোলার ভাবনা নিয়ে একের পর এক শো করতে থাকে। আর দর্শকরা অবাক হয়ে যান তাদের এই সুরের মূর্ছনায়।

এখনও পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩০০-র কাছে শো করে ফেলেছে অস্ট্রিয়ার এই অর্কেস্ট্রা। দেশে বিদেশে শো করে বেড়ায় তারা। তবে সব শোয়ের আগেই অর্কেস্ট্রার সদস্যরা বাজার যান। কিনে আনেন নানা প্রয়োজনীয় আনাজ। দেখে নেন সেগুলির আকার। তারপর শোয়ের আগে সেগুলি কেটে বা ফুটো করে নিজেদের অভিনব বাদ্যের রূপ দেন।

শো শেষ হলেও রয়েছে চমক। তাঁরা যে আনাজ দিয়ে বাদ্য বানান সেগুলি দ্রুত নষ্ট হতে থাকে। সেগুলি দিয়ে তাঁরা জৈব সার প্রস্তুত করে ফেলেন। আর যে আনাজগুলি বেঁচে যায় তা দিয়ে স্যুপ বানিয়ে দর্শকদের খাওয়ান। ইতিমধ্যেই এই বিশেষ ভাবনায় শো করার জন্য বিশ্বরেকর্ড করেছে এই দল।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button