বুকে বুলেট লাগার পর রক্তাক্ত অবস্থাতেও নিজের বক্তৃতা শেষ করেন রাষ্ট্রনেতা
আততায়ীর ছোঁড়া বুলেটটা সোজা এসে বুকে ঢুকে গিয়েছিল। কিন্তু তার পরও রক্তাক্ত অবস্থায় নিজের বক্তৃতা শেষ করে তবেই হাসপাতালে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রনায়ক।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য চলছিল প্রচারপর্ব। প্রচারের কাজেই তিনি এসেছিলেন। সভায় তখন অনেক মানুষ এসেছেন। সকলেই তাঁর কথা শোনার জন্য উদগ্রীব। যাঁকে শোনার জন্য এত আগ্রহ সেই মহান নেতা মঞ্চে ওঠেন। আর ঠিক তখনই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় এক সময় সেলুন চালানো এক ব্যক্তি।
গুলিটা এতটাই নিখুঁতভাবে চালানো হয়েছিল যে তা সোজা ঢুকে যায় নেতার বুকে। তাঁকে তাঁর অনুগামীরা দ্রুত ধরে ফেলেন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে ছোটার জন্য হইচই শুরু হয়। কিন্তু সকলকে থামান রক্তাক্ত নেতা।
তিনি অনুগামীদের জানিয়ে দেন তিনি যে বক্তৃতা পেশ করার জন্য এসেছেন সেই বক্তৃতা সম্পূর্ণ না করে তিনি কোথাও যাবেননা। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি বুক পকেট থেকে তাঁর লিখে আনা বক্তৃতার কাগজটা বার করেন। সেটা তখন রক্তে ভেজা।
সেই কাগজটাই খুলে পড়তে শুরু করেন। শুরুতেই তিনি বলেন, সকলে বুঝতে পারছেন কিনা তিনি জানেননা, তবে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
আমেরিকার উইসকনসিনে তাঁর বক্তৃতা শেষ হলে তারপরই থিওডোর রুজভেল্টকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসকেরা দেখেন তাঁর ফুসফুসে প্রবেশ করতে পারেনি বুলেটটি। কিন্তু তার পিছনে ছিল তাঁর সেই বক্তৃতার কাগজ। যা ভাঁজ করে রাখা ছিল পকেটে। ফলে তার ৫০টা পাতা মোটা হয়েছিল। তাতে বুলেট লেগে সেটির গতি অনেকটাই মন্থর হয়ে যায়।
তাছাড়া তাঁর পকেটে থাকা চশমার খাপেও ধাক্কা খায় বুলেটটি। তার জেরেই সেটি গতি হারিয়ে ফুসফুস পর্যন্ত পৌঁছনোর আগেই থেমে যায়।
তবে তাঁর শরীর থেকে বার হওয়া রক্তে ভিজে যায় বক্তৃতার কাগজটি। সে যাত্রায় রক্ষাও পান আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি থিওডোর রুজভেল্ট। ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯১২ সালের ১৪ অক্টোবর।