মধ্যপ্রাচ্যের তেল রাজনীতি, সন্ত্রাসবাদ, সন্ত্রাস মোকাবিলায় ভারত-পাকিস্তান যৌথ হানার কামাল, যৌন অত্যাচার, সন্ত্রাসে শিশুদের ব্যবহার, সবই একে একে উঠে এসেছে সেলুলয়েডের পর্দায়। সঙ্গে অতিমানবিক সলমন ‘টাইগার’। হিন্দি মশালা সিনেমার তথাকথিত গাঁজাখুরি, আর হিরোকে কোথাও ‘টারমিনেটর’ করে তোলা।
টাইগার এখানে একাই ১ হাজার! ভারতের ‘র’ আর পাকিস্তানের ‘আইএসআই’-এর হাত মিলিয়ে জঙ্গি দমন। টাইগার জিন্দা হ্যায় সিনেমায় এসব যেমন পরতে পরতে উঠে এসেছে তেমনই কোথাও যেন মার্কিন দাদাগিরিকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা হয়েছে। যেখানে মার্কিন মুলুকের হালফিল বন্ধু হিসাবে পরিচিত ভারতও মার্কিন গোঁয়ার্তুমির শিকার। পেন্টাগনের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ভারতীয় ও পাকিস্তানি নার্সদের মুক্ত না করতে পারলে, সবসুদ্ধ গোটা একটি হাসপাতাল উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে আমেরিকা। আর সেখানেই সেই সময়সীমার মধ্যে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসছে টাইগার ও তার কোর টিম।
সিনেম্যাটিক তো বটেই, কিন্তু কোথাও গিয়ে আমেরিকা যা পারেনা তা ভারত, পাকিস্তান এক হয়ে করে দেখাতে পারে বলে প্রমাণের চেষ্টা হয়েছে টাইগার জিন্দা হ্যায়-তে। তাও আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে। ফলে মার্কিন মুলুকের বেঁধে দেওয়া সময়ও এখানে পণবন্দিদের ছাড়তে সন্ত্রাসবাদের সময় বেঁধে দেওয়ার মতই ঠেকেছে।
জঙ্গিদের প্রবণতা, অপহরণ করে সময় বেঁধে দেওয়ার। তারমধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে পণবন্দিদের হত্যা করার হুমকি দেয় তারা। সিনেমায় সময় বেঁধে দিয়ে তার মধ্যে রেসকিউ অপারেশন সম্পূর্ণ করতে না পারলে সবসুদ্ধ উড়িয়ে দেওয়ার মার্কিন হুমকি কী কোথাও আর এক সন্ত্রাসের ইঙ্গিত দিয়ে গেল? তাহলে এ সিনেমায় কোন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়লেন টাইগার? এসব প্রশ্ন কিন্তু অচিরেই তুলে দিয়ে গেল টাইগার জিন্দা হ্যায়।
বাদ বাকি হিন্দি সিনেমা হিসাবে সফল এই ছবি। সলমন একাই এই সিনেমার অনেকটা জুড়ে আছেন। তাঁর পর্দায় উপস্থিতি যে বাজার দেয় তা মাত্র ৩ দিনে ১০০ কোটির ক্লাবে টাইগার জিন্দা হ্যায় ঢুকে পড়া থেকে পরিস্কার। টিউবলাইট মুখ থুবড়ে পড়ার পর ফের স্বমূর্তি ধারণের সুযোগ পেলেন ভারতীয় সিনেমার সুপারস্টার সলমন খান। ভাল হয়েছে সিনেমাটোগ্রাফি। এ ধরণের সিনেমায় গানের ব্যবহার থাকার কথা নয়। তেমন একটা নেইও। যেটুকু আছে, মন ছুঁয়ে গেছে। পরেশ রাওয়ালের অভিনয় নজর কাড়া। তিনি অভিনয় ছাড়া নাকি সব করেন, এমন অপবাদ অনেকটাই ঘোচাতে পেরেছেন ক্যাটরিনা কাইফ। যেটুকু অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন, ভাল করার চেষ্টা করেছেন।