শহরে থেকেও বাবার শেষকৃত্য ফেসবুক লাইভে দেখলেন মেয়ে
মেয়ে কী তবে ভয়ে বাবার কাছে গেলেন না, কিন্তু বাবার মৃত্যু তো স্বাভাবিক ছিল
তিনি থাকেন শারজায়। সেখানে একটি স্কুলে পড়ান। তাঁর স্বামী পেশায় ব্যবসায়ী। গত ২০ মার্চ তিনি দুবাই থেকে বিমানে কেরালার কোচি শহরে পৌঁছেও যান। এখানেই তাঁর বাবা থাকতেন। বাবার কাছে পৌঁছেও যান ওই মহিলা। আর তার ঠিক পরদিনই বাবার মৃত্যু হয়।
দুবাই থেকে উড়ে পরিবার নিয়ে অসুস্থ বাবার কাছে পৌঁছতে পারলেও শেষ পর্যন্ত কোচিতে বসেও বাবার শেষকৃত্যে থাকতে পারলেন না সুজান থমাস নামে ওই মহিলা। সেই শেষকৃত্যে অনেক বৃদ্ধ-বৃদ্ধা পরিবারের লোকজন থাকলেও তিনি মেয়ে হয়ে পুরো শেষকৃত্য ঘরে বসে দেখলেন ফেসবুকে।
মেয়ে কী তবে ভয়ে বাবার কাছে গেলেন না? কিন্তু বাবার মৃত্যু তো স্বাভাবিক ছিল! তিনি তো কোভিড আক্রান্ত ছিলেন না! তাহলে কিসের ভয়! মেয়ে হয়ে বাবার শেষকৃত্যে সুজান যাননি কেন তা তিনি সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর একটি সংবাদমাধ্যমে খোলসা করেছেন। আর তা জানার পর তাঁকে সেলাম জানাচ্ছেন অনেকেই।
সুজান জানিয়েছেন, তিনি বাবার কাছে কোচিতে যেদিন দুবাই থেকে আসেন, সেদিন ওই বিমানে তাঁদের সঙ্গে এক করোনা সংক্রমণের শিকার ব্যক্তিও এসেছিলেন। ওই ব্যক্তি একই বিমান এতটা পথ একসঙ্গে আসেন। তাই বিমানের সকলেরই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ছিল। তাই তিনি ঝুঁকি না নিয়ে ২০ মার্চ কোচিতে ফিরেই পরিবার নিয়ে স্বদিচ্ছায় বাড়িতে নিজেদের বন্দি করে ফেলেন।
তিনি জানান, তিনি বা তাঁর পরিবার যদি কোনওভাবে তাঁদের বিমানে ওই সহযাত্রীর কারণে করোনা বাহক হয়ে থাকেন তবে তা অন্যদের মধ্যে ছড়াতে পারত শেষকৃত্যে গেলে। সেই ঝুঁকি তিনি নিতে চাননি। অন্যদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করেই তিনি, তাঁর স্বামী ও সন্তান নিজেদের ঘরে বন্দি রেখেছিলেন। আর ফেসবুকেই বাবার শেষকৃত্য দেখতে বাধ্য হয়েছিলেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা