দেখতে দেখতে ১ বছরে পা পড়ল বিশ্বের একমাত্র যোনি মিউজিয়ামের। এই ১ বছরে দাঁতে দাঁত চেপে অনেক লড়তে হয়েছে। সামলাতে হয়েছে ব্যঙ্গবিদ্রূপ, সমালোচনার ঝড়। তাতেও অবশ্য দমেননি ফ্লোরেন্স শেচার। গত বছর মে মাসে ব্রিটেনে পেশায় কৌতুক শিল্পী তরুণী গড়ে তোলেন যোনি সর্বস্ব মিউজিয়াম। লন্ডন উদারপন্থী বুদ্ধিজীবীদের শহর হিসেবে বিশ্ববন্দিত। কিন্তু এমন অভিজাত শহরের মানুষ নারী ও যৌনতার ব্যাপারে বড় বেশি যেন উদাসীন। অন্তত তেমনই উপলব্ধি করেছিলেন ফ্লোরেন্স। তিনি নারী স্বাস্থ্য ও তাঁদের যৌন সমস্যা নিয়ে অহেতুক রাখঢাক মানসিকতার বেড়াজাল থেকে মানুষকে বার করতে চেয়েছিলেন। অতএব অনেক ভাবনাচিন্তা করে ‘যোনি মিউজিয়াম’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেন ফ্লোরেন্স।
কাজটা সহজ ছিল না। পুঁজি, জমি আর লোকবলের সমস্যা পাহাড় প্রমাণ বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাঁর সামনে। তবে ফ্লোরেন্সের অভিনব উদ্যোগে চমৎকৃত হয়ে তাঁর পাশে এসে দাঁড়ান শুভানুধ্যায়ীরা। সোশ্যাল সাইটে যোনি মিউজিয়াম নির্মাণের প্রচার শুরু হয়। এমন অদ্ভুত প্রয়াসের খবর চাউর হতেই অনলাইনে আসতে থাকে অর্থ সাহায্য। এই লড়াইয়ে ২০ বছরের তরুণী পাশে পান সঙ্গীতশিল্পী বাবা গ্রেগরি শেক্টারের সমর্থন আর সমর্থকদের ভালোবাসা।
ইতিমধ্যে যোনি মিউজিয়ামের ডানার বিস্তার করতে উঠে পড়ে লেগেছেন ফ্লোরেন্স। মিউজিয়ামের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ চালাতে বিক্রি করা হচ্ছে লোগো। মিউজিয়ামের ভিতরে বসানো হয়েছে ক্যাফে। সেখানে অর্ডার দিলেই পাওয়া যাচ্ছে নারীর যোনি সদৃশ কাপ কেক, পেস্ট্রি। নারী যোনিপথ নিয়ে আঁকা নানা ছবি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা আছে। চাইলে সেইসব ছবি কিনতে পারেন আগ্রহী ক্রেতারা। মিউজিয়ামে আছে নারী যোনিপথের ভাস্কর্য। নারী স্বাস্থ্য ও তাঁর সুরক্ষা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে মাঝে মাঝে আলোচনা সভা, বিতর্কসভা অনুষ্ঠিত হয় যোনি মিউজিয়ামে। নারীর যোনিপথ নিয়ে ছুৎমার্গ দূর হোক মানুষের মন থেকে। লোকে মিউজিয়ামে আসুন। স্বচক্ষে দেখুন নারী শরীরের গোপনাঙ্গকে। সকলে উপলব্ধি করুন যোনি মানে খারাপ কিছু নয়। মিউজিয়ামের হাত ধরে এই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার স্বপ্নে বিভোর যোনি মিউজিয়ামের জননী।