বাদুড়রাও অসুখ হলে সচেতনতার প্রমাণ দিয়ে আইসোলেশনে থাকে
করোনাকালেও কিছু মানুষ সচেতন নন। কিন্তু বাদুড়রাও অসুখ হলে যায় আইসোলেশনে। আলাদা থাকে অন্যদের থেকে। অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলে আইসোলেশনের নিয়ম।
লন্ডন : রাতের অন্ধকারে ওরা উড়ে বেড়ায় এধার ওধার। পৃথিবীতে এমন মানুষের দেখা মেলা মুশকিল যাঁরা বাদুড় ভালবাসেন। আপাত ব্রাত্য এই প্রাণিকে বরং এড়িয়ে চলতেই পছন্দ করেন সকলে।
বাদুড়ের ২টি লম্বা দাঁতের থেকেই জন্ম নিয়েছে ভ্যাম্পায়ার ড্রাকুলা চরিত্র। বাদুড়কে সকলে খারাপভাবেই দেখে এসেছেন। কিন্তু সেই বাদুড়রাও অসুখ হলে চলে যায় আইসোলেশনে।
হয় তারা নিজেরাই চলে যায়। আর কেউ যেতে না চাইলে তাকে বাদুড়ের দলই আইসোলেশনে পাঠিয়ে দেয়।
যতদিন অসুখ থাকে ততদিন তারা আলাদা থাকে। সকলের থেকে আলাদা। কেউ সঙ্গে থাকবেনা। ওরাও কোথাও বার হবে না। তবে তাদের যত্নের অভাব হয়না। একজন সুস্থ বাদুড় প্রতিদিন তাদের যাবতীয় দেখভাল খোঁজখবরের দায়িত্বে থাকে।
এমন করে অসুখ সারার পর ফের সুস্থ হয়ে ওঠা বাদুড় ফিরে আসে তার দলে। সকলে তাকে স্বাগত জানিয়ে ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নেয়। এভাবেই চলে বাদুড়দের জীবন।
‘বিহেভিওরাল ইকোলজি’ নামে একটি পত্রিকায় এমনই একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। দীর্ঘ গবেষণা ও পর্যবেক্ষণের পরই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন গবেষকরা।
তাঁরা জানাচ্ছেন কোনও বাদুড় ঝিমিয়ে পড়লে, কোথাও যেতে না চাইলে বা অতিরিক্ত ঘুমোলে বাকিরা বুঝতে পারে যে ওই বাদুড় অসুস্থ। তখন হয় সে নিজে আলাদা হয়ে যায় অথবা অন্যরা তাকে আলাদা করে দেয়।
কারণ একজন সংক্রমিত দলে থাকলে দ্রুত তার দেহে থাকা জীবাণু অন্যদেরও সংক্রমিত করবে। তাই তাকে আলাদা করে দেওয়ার এই প্রথা। বাদুড়রাও জানে সংক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
সাধারণভাবে গাছের কোনও কোটরে হয় আইসোলেশনের ব্যবস্থা। সেখানেই সংক্রমিত বাদুড়রা থাকে। সেখান থেকেই ৩১টি বাদুড়ের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে গবেষকেরা নানা বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন।
এরা সুস্থ হয়ে ফের ফিরে যায় স্বাভাবিক জীবনে। শুধু বাদুড় বলেই নয়, এই প্রকৃতিতে এমন অনেক পতঙ্গ পর্যন্ত রয়েছে যারা অসুস্থ হলে আইসোলেশনে যায় যাতে বাকিরা সংক্রমিত না হয়। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা