রেগে আগুন ট্রাম্প, রাশিয়া ও চিনের পথেই হাঁটতে চলেছে আমেরিকা
রাশিয়া ও চিনের পথেই কী এবার হাঁটতে চলেছে আমেরিকা? অন্তত আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সেই ইঙ্গিত দিয়ে দিল।
নিউ ইয়র্ক : অগাস্টেই রাশিয়া তাদের তৈরি করোনা প্রতিষেধক টিকা স্পুটনিক ভি-কে সরকারিভাবে মান্যতা দিয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সদর্পেই ঘোষণা করেছেন রাশিয়াই প্রথম দেশ যারা করোনা প্রতিষেধক টিকা আনতে সমর্থ হল। তবে রাশিয়া তাদের টিকা তৃতীয় দফার ট্রায়াল পর্ব শেষ না করেই এনে ফেলেছে।
অন্যদিকে রাশিয়ার পথ অনুসরণ করে চিন তাদের তৈরি টিকাকে ট্রায়ালের তৃতীয় স্তর অতিক্রম না করেই মান্যতা দিয়ে দিয়েছে। সরকারি সিলমোহর পেয়েছে রাশিয়া ও চিনের টিকা। বিশ্বের তাবড় বিশেষজ্ঞ যদিও এটা ভাল চোখে নেননি। তৃতীয় পর্যায় সমাপ্ত না করেই এভাবে টিকাকে মান্যতা দেওয়া সঠিক নয় বলেই অভিমত তাঁদের। এবার কিন্তু সেই একই পথে হয়তো হাঁটতে চলেছে আমেরিকাও। অন্তত আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সেই ইঙ্গিত দিয়ে দিল। এর পিছনে অবশ্য ট্রাম্পের রাগ একটা কারণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
একে করোনায় বিধ্বস্ত আমেরিকা। তারওপর নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের চেয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে তাঁর দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট হওয়া হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। এই অবস্থায় ট্রাম্প গত সপ্তাহে খোলাখুলি অভিযোগের সুরে জানিয়েছেন, তাঁকে নভেম্বরে হতে চলা নির্বাচনে সমস্যায় ফেলতেই আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এফডিএ বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে ওষুধ ও টিকা পরীক্ষায় ছাড়পত্র দিচ্ছেনা। স্পষ্টতই এফডিএ-র বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্টের রাগ প্রকাশ্যে উঠে এসেছে।
তারপরই এই সপ্তাহে একটি সংবাদপত্রকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কমিশনার স্টিফেন হান একটা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে আমেরিকায় তৃতীয় স্তরের অপেক্ষা না করেই হয়তো পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে টিকায় ছাড়পত্র দেওয়া হতে পারে। তবে এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক কারণে বলে মানতে চাননি তিনি। অর্থাৎ ট্রাম্পের রাগের কারণেই এমন পদক্ষেপ এফডিএ করবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে তিনি এটা বলেছেন যে তৃতীয় স্তর শেষ না করেই আমেরিকায় যদি টিকার ছাড়পত্র চেয়ে এফডিএ-র দ্বারস্থ হয় কোনও সংস্থা তবে তাঁরা তা খতিয়ে দেখে ছাড়পত্রের রাস্তায় হাঁটবেন।
অক্সফোর্ডের তৈরি টিকার পরীক্ষা দ্রুত করে আমেরিকায় তা দ্রুত আনা হতে পারে বলেই ইঙ্গিত রয়েছে। সেক্ষেত্রে কিন্তু নভেম্বর আসতে মাঝে আর ২টি মাস। তার মধ্যেই কী তবে আমেরিকা টিকায় ছাড়পত্র দিয়ে দেবে রাশিয়া বা চিনের মত? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও বিশেষজ্ঞেরা তৃতীয় স্তর শেষ হওয়ার আগেই টিকা ছাড়পত্রকে এখনও ভাল চোখে নিচ্ছেন না। প্রসঙ্গত সংক্রমণ ও মৃত্যুতে এখনও বিশ্বে ১ নম্বরে রয়েছে আমেরিকা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা