প্যাডম্যানের পর এবার ইতিহাস লিখলেন প্যাড ওম্যান
এতদিন প্যাডম্যান-এর কথা সকলে জানতেন। এবার প্যাড ওম্যান লিখলেন তাঁর ইতিহাস। জীবনের এক বেদনার স্মৃতির হাত ধরে তিনি আজ দেশের প্যাড ওম্যান।
বছর চারেক আগের কথা। ঋতুস্রাবকালীন সময়ে কেবল অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহার করে তাঁর এক পরিজনের মৃত্যু হয়। সেই স্মৃতি তাঁকে নাড়া দিয়ে গিয়েছিল। স্থির করেছিলেন ঋতুস্রাবকালীন সময়ে অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহারের এই প্রবণতায় দাঁড়ি টানতে লড়াই চালাবেন তিনি।
সাধারণত শহরের চেয়ে গ্রামের মহিলাদের মধ্যে ঋতুস্রাবকালীন সময়ে স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার না করে অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহারের প্রবণতা থাকে। যা থেকে প্রায়ই অন্য সংক্রমণে আক্রান্ত হন তাঁরা।
যে সময় স্বাস্থ্যকর বন্দোবস্তে বেশি জোর দেওয়া উচিত, মাসের ঠিক সেই দিনগুলোতেই তাঁরা সবচেয়ে অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহার করেন।
এই প্রচলন বন্ধ করে গ্রামের মহিলাদের স্যানিটারি ন্যাপকিন সম্বন্ধে শিক্ষিত করে তুলতে একাই উদ্যোগী হন ইংরাজির শিক্ষিকা বন্দনা সিং।
বন্দনা সিং নিজের রোজগারের টাকা থেকে স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনে গ্রামে গ্রামে পৌঁছতে থাকেন। সেখানে মহিলাদের এর প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে থাকেন। বিনামূল্যেই হাতে তুলে দেন স্যানিটারি ন্যাপকিন।
বন্দনা সিং জানিয়েছেন, প্রথম দিকে গ্রামে গ্রামে এ বিষয়ে মহিলাদের বোঝাতে গেলে অনেক সময় হাসিঠাট্টার মুখে পড়তে হত তাঁকে। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি।
উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের বাসিন্দা বন্দনা সিং এখনও তাঁর প্রতি মাসের মাইনের ১০ শতাংশ ব্যয় করেন স্যানিটারি প্যাড কিনতে। তারপর তা নিয়ে পৌঁছে যান কোনও একটা গ্রামে। সেখানে মহিলাদের বোঝান এর উপকারিতা ও প্রয়োজনীয়তা।
এখন কিন্তু সব বয়সের মহিলার কাছে তিনি পরিচিত মুখ। তাঁর উদ্যোগ নানা জায়গায় প্রশংসিত হয়েছে। নিজের অজান্তেই তিনি হয়ে উঠেছেন দেশের প্যাড ওম্যান।
এক সময় দেশে এই উদ্যোগ নিয়ে প্যাডম্যান আখ্যা পেয়েছিলেন মুরুগানান্থম। এবার দেশের প্যাড ওম্যান আখ্যা পেলেন বন্দনা সিং। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা