সেকেন্ডহ্যান্ড প্রেম পাওয়া যায় এই মার্কেটে
বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়া নির্ভর প্রযুক্তির যুগে যখন ভালোবাসা ক্ষণস্থায়ী বুদবুদের সমান হয়ে উঠেছে, সেখানে এই ধরণের মার্কেটের বিপণন জরুরি বলে মনে করছেন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা।
যে জন প্রেমের ভাব জানেনা, তাঁর সঙ্গে নাই লেনাদেনা, খাঁটি সোনা ছাড়িয়া যে নেয় নকল সোনা, সে জন সোনা চেনেনা। বিখ্যাত এই লোকসঙ্গীতের ভাবমূর্চ্ছনা বাংলার মাটি ছেড়ে সুদূর ভিয়েতনামের প্রেমে ব্যর্থ কপোত-কপোতীদের হৃদয়ে বুঝি আলোড়ন তুলেছিল। তাই মনের শান্তি পেতে সে দেশের প্রেমিক-প্রেমিকারা প্রেমের হাটে কেনা-বেচা করেন তাঁদের প্রাক্তন ‘সোনা’-দের দেওয়া সোনা, থুড়ি, ভালোবাসার উপহার।
ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ের বুকে এমনই এক আজব বাজার গড়ে উঠেছে। ২০১৭-র ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কেটটির উদ্বোধন হয়। ভিয়েতনামের ওল্ড ফ্লেমস মার্কেট ভালোবাসার মানুষের জন্য নানা রকমের উপহারের পসরা সাজিয়ে বসে আছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এতে নতুনত্বের কি আছে? নেটিজেনদের এই যুগে এই ধরণের হাজারো বাজার বা দোকান তো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
চমক এখানেই। ভিয়েতনামের এই বাজারটির বিশেষত্ব অন্য জায়গায়। এখানে যেসব কার্ড, লাভনোট, রঙবেরঙের বাতি, পুরনো বই, বাহারি পোশাক, মানিব্যাগ, সুগন্ধিসহ অন্যান্য উপহার পাওয়া যায়, সেগুলো কোনও না কোনওভাবে প্রেমে আঘাত পাওয়া কেউ এসে বিক্রি করে গেছেন। অতীত প্রেমকে ভুলে যেতে কি অদ্ভুত অহিংস তাঁদের এই পন্থা। তাঁদের সেই চোখের জলে ভেজা, ভাঙ্গা হৃদয়ের স্পর্শমাখা উপহারের চাহিদাও কিন্তু তুঙ্গে।
সদ্য প্রেমে পড়া কিংবা পুরনো হয়ে যাওয়া প্রেমিক-প্রেমিকারা এই হাটে ভিড় করেন। রীতিমত দরদাম করে উপহার কেনেন তাঁদের বর্তমান প্রিয়তম বা প্রিয়তমার জন্য। এমনকি উৎসাহী পর্যটক থেকে সাধারণ মানুষের কাছেও দ্রষ্টব্য এই বাজার।
বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়া নির্ভর প্রযুক্তির যুগে যখন ভালোবাসা ক্ষণস্থায়ী বুদবুদের সমান হয়ে উঠেছে, সেখানে এই ধরণের মার্কেটের বিপণন জরুরি বলে মনে করছেন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। তাহলে আর কি? খাঁটি ভালোবাসার উপহার পেতে একবার ঢুঁ মেরে আসাই যায় হ্যানয়ের ভাঙ্গা-মনের হাটে।