আনন্দ ভোকাট্টা, আকাশে ডানা মেলল নামমাত্র ঘুড়ি
করোনা এবার বিশ্বকর্মা পুজোর দিনের ঘুড়ির মজাকেই ভোকাট্টা করে দিল। আকাশে ডানা মেলল নামমাত্র ঘুড়ি।
কলকাতা : সারাদিন আকাশের দিকে চেয়েও ঘুড়ির সেভাবে দেখা মিলল কই। যাঁরা সচরাচর ছাদে ওঠেন না, তাঁরাও বিশ্বকর্মা পুজোর সকালবেলায় বা দুপুরে বারবার ছাদে ঘুরে আসেন। ঘুড়ি পড়ল না তো! একবার ঘুরে দেখে আসা। একবার আকাশটা দেখে নেওয়া। কত ঘুড়ি ডানা মেলল তাতে একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া।
আর যাঁরা ঘুড়ি ওড়াতে ভালবাসেন তাঁরা তো সুতোয় মাঞ্জা দিয়ে তৈরিই থাকেন বিশ্বকর্মা পুজোর সারাটা দিন আকাশে তাঁদের দাপট দেখাতে। এমনও অনেকে আছেন বাড়ির কচিকাঁচাদের নিয়ে এদিনটা ছাদে উঠে ঘুড়ি ওড়ান। সারা বছরের অনভ্যাসে প্রথমটা অসুবিধা হয়। আবার ছোটবেলার পুরনো অভ্যাসে পরে হাত সেট হয়ে যায়।
এমনভাবেই বিশ্বকর্মা পুজোটা কাটাতে ভালবাসেন আম বাঙালি। এই একটাই দিনে তাঁদের ঘুড়ি ওড়ানোর ইচ্ছা জেগে ওঠে। এবারও তাঁদের ছাদটা আছে। হয়তো গত বারের লাটাইতে কিছু সুতোও গোটানো আছে। ২টো ৪টে ঘুড়িও রয়ে গেছে খবরের কাগজ দিয়ে মোড়া অবস্থায়। পাড়ার ঘুড়ির দোকানটাও এদিন খুলেছে। সবই আছে। কেবল উৎসাহটা নেই। করোনা মানুষের জীবন থেকে একটু একটু করে সকলের অজান্তেই কেড়ে নিয়েছে আনন্দের অনুভূতিগুলো। খুশিতে মেতে ওঠার উৎসাহ।
বিশ্বকর্মা পুজো হলেও এদিন কিন্তু সকাল থেকেই আকাশে ঘুড়ির দেখা সেভাবে মেলেনি। আকাশে মেঘ তেমন ছিলনা। ঝকঝকে আবহাওয়া ছিল। ঘুড়ি ওড়ানোর মত পরিবেশ ছিল। কিন্তু ওই উৎসাহে ভাটা কোথাও ঘুড়ির আকর্ষণেও ভাটার টান এনে দিয়েছে।
সকাল থেকে বেলা গড়িয়ে বিকেল। দুপুর পর্যন্ত সেভাবে ঘুড়ির দেখা না মিললেও বিকেলের দিকে কিছু মানুষ ঘুড়ি মেলে দিয়েছেন আকাশের বুকে। ফলে বিকেলের দিকে আকাশে কিছু ঘুড়ির দেখা মিলেছে। তবে অন্যান্য বারের সঙ্গে তার তুলনা করারই কোনও মানে হয়না। কারণ তুলনায় সংখ্যাটা নগণ্য। তবু আকাশে কিছু ঘুড়ির দেখা মিলেছে এটাও অনেকটা পাওয়া।
ঘুড়ি ওড়ালে করোনা হতে পারেনা। ঘুড়ি সামাজিক দূরত্ব কমায় না। মূলত ছাদে ছাদে পরিবারের মানুষের সমাগম থাকে। বাইরে থেকে আসেন বটে অনেকে। তবে সেটা বর্জন করতে পারলে এবার ঘুড়ি ওড়ানোয় সমস্যার কিছু ছিলনা। যেটা ছিল সেটা একটা অজানা আতঙ্ক। যা মানুষের এই ছোট্ট, ছোট্ট আনন্দ, খুশি, অনুভূতিগুলোকে কখন কেড়ে নিয়েছে তা হয়তো তাঁরা নিজেরাও জানেন না।