বিশ্বকর্মা পুজো মানেই আকাশ জুড়ে ঘুড়ির মেলা। পেটকাটি, চাঁদিয়াল, ময়ূরপঙ্খী, মুখপোড়া আরও কত নামের ঘুড়ি যে আকাশ আলো করে থাকে তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। বিশ্বকর্মা পুজোর সকাল থেকেই শরতের আকাশের দখল নেয় রংবাহারি ঘুড়ির দল। অন্যবারের মত এবারও বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিন আকাশে ঘুড়ির মেলা বসতে দেখা গেছে। এবার বৃষ্টি কম। ফলে শরতের ঝলমলে নীল আকাশ পেয়েছেন ঘুড়ি প্রেমীরা। মঙ্গলবার কিন্তু আকাশে যথেষ্ট ঘুড়ি নজর কেড়েছে। বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিন কিছুটা হাত পাকিয়ে নেওয়া বা অনুশীলন বলা যেতে পারে।
মঙ্গলবার বিভিন্ন ঘুড়ির দোকানে বিশাল ভিড় নজর কেড়েছে। এখন আবার নানা ধরণের মাঞ্জা এসেছে। চিরাচরিত কাচের গুঁড়োর মাঞ্জার জায়গায় এখন বাজার দখলে পাল্লা দিচ্ছে চিনের মাঞ্জা। বেশ ভাল ধার। কম দাঁত্তি পড়ে। শক্তপোক্ত তো বটে। ফলে অনেকেই এখন চিনা মাঞ্জার দিকে ঝুঁকেছেন। চমক রয়েছে ঘুড়িতেও। পশ্চিমবঙ্গে সাধারণত চৌকো ঘুড়ির বাজার। সে কাগজের হোক বা প্লাস্টিকের। এখন আবার সেই প্রচলিত ধরণে থাবা বসিয়েছে বিভিন্ন বাহারি ঘুড়ি। যা সবসময় চৌকো নয়। চিনে যেমন নানা ধরনের আকৃতির ঘুড়ি দেখা যায়। এখন রাজ্যের বিভিন্ন কোণাতেও ঘুড়িপ্রেমীদের হাতে সেসব ঘুড়ি শোভা পাচ্ছে। আকাশে উড়ছে। তবে এসব ঘুড়ি দিয়ে কাটাকাটির লড়াই হয়না বড় একটা। কেবলই শো পিস।
এবার অবশ্য মাঞ্জা হিসাবে চিনা মাঞ্জা বিকোচ্ছে যেমন, তেমন সকলের জন্য একটা বার্তা বিভিন্ন মহল থেকে দেওয়া হচ্ছে। চিনা মাঞ্জা বেকায়দায় অন্য কারও শরীরে লাগলে তা অনেক সময় ভয়ংকর হচ্ছে। অনেক সময় গলায় লাগলে তা প্রাণঘাতীও। ফলে সেদিকটা একটু নজর রাখতে বলা হচ্ছে ঘুড়িপ্রেমীদের। এর বাইরে ঘুড়ি, লাটাই, মাঞ্জা নিয়ে ছাদে দাঁড়িয়ে আকাশের বুকে দাদাগিরি ফলাতে সকলেই গোপনে তৈরি হচ্ছে। যা দেখানোর বুধবার সকাল থেকে দেখিয়ে দেবেন তাঁরা। আকাশ ছেয়ে যাবে বাহির ঘুড়িতে। ভারতের নানা প্রান্তে মকর সংক্রান্তিতে ঘুড়ি ওড়ানোর রেওয়াজ আছে। কিন্তু এ রাজ্যে বিশ্বকর্মা পুজোই হল সবচেয়ে বড় ঘুড়ি ওড়ানোর উৎসব। যেখানে সকলে একদিনের জন্য ফিরে পান তাঁদের শৈশবকে।