Kolkata

বিশ্বকর্মা পুজোয় মাতোয়ারা বাংলা, শরতের আকাশে ঘুড়ির রংবাজি

আজ বিশ্বকর্মা পুজো। সকাল থেকেই শুরু হয়েছে পুজোর প্রস্তুতি। বিশেষত কলকারখানায় ভোর থেকেই কর্মীরা আসতে শুরু করেছেন। কেউ ঠাকুর সাজাচ্ছেন। কেউ হাতে গড়া ছোট্ট প্যান্ডেলে ফিনিশিং টাচ দিচ্ছেন। কারও আবার দায়িত্ব পড়েছে হোমের কাঠ কেটে টুকরো করার। কেউ পুজোর জায়গাটা ধুয়ে মুছে পরিস্কার করছেন। অনেক কারখানার মালিক আবার কারখানা থাকলেও বাড়িতে আলাদা করে বিশ্বকর্মার আরাধনায় মেতে ওঠেন।

সকাল থেকেই তৈরি হয়ে পথে নেমেছেন ঠাকুরমশাইরা। এদিন তাঁদের দম নেওয়ারও ফুরসত নেই। এদিন অনেক জায়গায় ভোরেই পুজো হয়ে গেছে। সেখানে বাজছে মাইক। মাইকে গানের আওয়াজ পুজোর দিনগুলোকে আরও উৎসব মুখর করে তোলে। মানুষের মনে বেশ একটা পুজো পুজো গন্ধ ভরে দেয়। আর বিশ্বকর্মা পুজো মানেই তো দুর্গাপুজোয় ঢাকে কাঠি। উৎসবের মরসুমের শুরু। যদিও বঙ্গ জীবনে এখন গণেশ পুজো যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেছে। ফলে গণেশ পুজো দিয়েই এ রাজ্যেও এখন পুজোর মহরত হচ্ছে।


এদিন অনেক জায়গায় বিশ্বকর্মা পুজো শেষে খাওয়া দাওয়ার বন্দোবস্ত। বিশেষত কলকারখানায় তো বটেই। কোথাও ইলিশ। তো কোথাও পাঁঠার মাংস। কোথাও মুরগি। সঙ্গে খিচুড়ি বা ভাত, পাঁচমিশেলি তরকারি, ডাল, ভাজা। শেষ পাতে দই-মিষ্টি। খরচের একটা বড় অংশ মালিকের। এদিন কাজ নয়। মেশিনের দেবতার পুজো। ফলে মেশিন এদিন সারাদিন ঘুমে আচ্ছন্ন। বরং সারা বছর যে মেশিন নিরন্তর খেটে চলে, সেই মেশিন এদিন পূজিত হচ্ছে। তার তেলকালি মাখা শরীরে পড়ে মালা, গাঁদা ফুল। এ ছবি আগেও ছিল আজও আছে। সময় বদলেছে কিন্তু বঙ্গ জীবনের কয়েকটা দিন, কয়েকটা উৎসব তার চিরাচরিত স্পন্দন ধরে রেখেছে। অনেকে মনে করেন প্রজন্মের বদল অনেক পরম্পরাকে শেষ করে গড়ে তোলে নতুন পরম্পরা। কিন্তু বিশ্বকর্মা পুজোয় অন্তত পশ্চিমবঙ্গে সেই পরিবর্তন আজও অধরা।

Vishwakarma Puja
বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ঘুড়ি হাতে ময়দানে কচিকাঁচারা, ছবি – আইএএনএস

বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে সকাল থেকে শরতের আকাশ ঝলমল করছে। সুন্দর সোনা রোদ। ভোরের দিকে হাল্কা ঠান্ডা ঠান্ডা মেজাজি আবহাওয়া। ফলে সকাল হতেই ছাদে ভিড় জমিয়েছেন ঘুড়িমোদী বঙ্গবাসী। মাঞ্জা সুতো আর গোছা ঘুড়ি নিয়ে ব্যস্ত তাঁরা। তৈরি হচ্ছে কল। আর লাটাই হাতে কেউ দাঁড়াচ্ছেন যিনি ঘুড়ি ওড়াচ্ছেন তাঁর পিছনে। কোন ঘুড়ি কাছাকাছি এল, তাকে কীভাবে কাটতে হবে তার কঠিন লড়াইয়ে ব্যস্ত সকলে। আর ঘুড়ি কাটতে পারলে সমস্বরে কোরাস ভো-কাট্টা। সঙ্গে কাঁসর, ঘণ্টা, উলু, সিটি। আনন্দ প্রকাশের নানা উপায়। এটাই বিশ্বকর্মা পুজোর দিনের মাহাত্ম্য। আর সেই চিরাচরিত খুশিটাই সকাল থেকে চুটিয়ে উপভোগে ব্যস্ত রাজ্যবাসী।


Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button