নবাবের দাঁতের সমস্যাই জন্ম দিল গলৌটি কাবাবের
নবাব বাদশাহদের খাদ্য রসিকতার সাক্ষী ইতিহাস। তাঁদের মনের মত খাবার বানাতে গিয়ে রসুইরা জন্ম দিয়েছেন নানা জিভে জল আনা পদের। তেমনই এক মজার ইতিহাস গলৌটি কাবাবের।
অওধের শেষ নবাব ছিলেন ওয়াজিদ আলি শাহ। লখনউতে বসে তিনি ৯ বছর রাজ্য শাসন করেন। সেই শেষ। তারপর তাঁকে শেষ জীবনে কার্যত নির্বাসিত করা হয় কলকাতার মেটিয়াবুরুজে। এ ইতিহাস একেবারেই অন্য অধ্যায়।
এই ওয়াজিদ আলি শাহ ছিলেন খাদ্য রসিক নবাব। বিশেষত মাংসের নানা পদে তাঁর ছিল অমোঘ আকর্ষণ। কিন্তু একটা সময় আসে যখন তাঁর দাঁতের সমস্যা শুরু হয়। যা বাড়তেই থাকে।
দাঁত দুর্বল হয়ে যায়। ফলে তাঁর পক্ষে মাংস চিবিয়ে খাওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু তাঁর তো মাংসের পদ চাই! তখন তাঁর খাস রাঁধুনি ভেবেচিন্তে একটি উপায় বার করেন।
মাংসের টুকরো তো চিবিয়ে খাওয়া নবাবের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তিনি মাংসকে মিহি করে কুচিয়ে ফেলেন। যা দিয়ে তৈরি করেন এক বিশেষ ধরনের কাবাব। এই কাবাবের বিশেষ দিক হল এক মশলাও।
কাবাবটি তৈরি করতে ১০০-র ওপর মশলা ব্যবহার করা হয়। মিহি করে ফেলা মাংস আর শতাধিক মশলার মিশ্রণে এক নতুন কাবাবের জন্ম হয়। যা মুখে দিলে গলে যাবে। ফলে দাঁত দুর্বল হলেও সমস্যা নেই। স্বাদের যাদু তার জন্য এতটুকু কমবে না।
নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ-র জন্য তৈরি সেই গলৌটি কাবাব এখনও কাবাব প্রেমীদের জিভে জল আনার জন্য যথেষ্ট। যা তৈরিই হয়েছিল নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ-র নড়বড়ে দাঁতের কথা মাথায় রেখে।