সকাল থেকে আকাশ মেঘলা থাকলেও বৃষ্টি পড়েনি। কিন্তু একটা চাপা গরম ছিল। অস্বস্তি ছিল। দুপুর থেকে আকাশে ক্রমশ আরও পুরু মেঘে ছাইতে থাকে। আর দুপুর বিকেল থেকেই সেই কালো হয়ে আসা আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামে কলকাতা সহ আশপাশের জেলাগুলিতে। বৃষ্টি হয়েছে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতেও। বৃষ্টির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এদিন মুহুর্মুহু বজ্রপাত হয়েছে সর্বত্র। কলকাতায় তেমনই একটি বজ্রপাতের শিকার হন দমদমের বাসিন্দা সুবীর পাল নামে এক যুবক। ভিক্টোরিয়ার কাছে একটি বজ্রপাত হয় বৃষ্টির মধ্যেই। সেই বাজেই মৃত্যু হয় সুবীরবাবুর। আশপাশের প্রায় জনা দশেক মানুষ আহত হন। তঁদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
একটি ঘূর্ণাবর্ত সক্রিয় থাকায় এমন তুমুল বৃষ্টি বলে জানা গিয়েছে। এই মরশুমে টানা এক ঘণ্টার ওপর এমন তুমুল বৃষ্টি বড় একটা দেখা যায়নি। ফলে এদিন শহর কলকাতার বহু এলাকা জলের তলায় চলে যায়। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, কলকাতার সব পাম্পকে জল বার করে দিতে কাজে লাগানো হচ্ছে। তবে গঙ্গায় জোয়ার থাকায় জল নামতে সমস্যা রয়েছে। ভাটা হলে দ্রুত জল নামবে। জল নামতে নামতে শুক্রবার রাত বা শনিবার সকাল হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন তিনি।
বৃষ্টির জেরে এদিন কলকাতার বহু এলাকা জলের তলায় চলে যায়। একে শিয়ালদহ উড়ালপুলে যান চলাচল বন্ধ থাকায় প্রবল সমস্যার মুখে পড়ছেন মানুষজন। তারওপর এমন বৃষ্টি অন্যান্য রাস্তার অবস্থা শোচনীয় করে তোলে। প্রবল যানজটের সৃষ্টি হয়। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ এদিন সকাল থেকেই যানজটের কবলে। তা আরও খারাপ আকার নেয়। দক্ষিণ কলকাতাতেও জল জমেছে বহু রাস্তায়। অন্যদিকে উত্তরে বিটি রোডের ওপরেও জল দাঁড়িয়ে যায়।
বৃষ্টির জেরে এদিন প্রবল সমস্যার মুখে পড়েন অফিস ফেরত মানুষজন। অফিস শেষের সময়ই প্রায় বৃষ্টি থামে। তখন রাস্তা জলের তলায়। ফলে সমস্যা বেড়েছে। এদিন কলকাতা বলেই নয়, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। পুরুলিয়ায় মাঠে চাষ করার সময় বজ্রপাতে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু হয়। আগামী ২ দিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। বর্ষার শেষে এসে যেভাবে ব্যাটিং শুরু করেছে বৃষ্টি তাতে মনে করা হচ্ছে কলকাতায় এবার যে ৭০ শতাংশ বর্ষা ঘাটতির কথা বলা হচ্ছিল তা কিছুটা হলেও পূরণ হবে।