মাঘের শীতে নাকি বাঘ পালায়! প্রবাদ বটে। তবে এর মর্মার্থ হল মাঘে এমন ঠান্ডা পড়ে যে তা বলে বোঝানোর নয়। একথা এখন অবশ্য রাস্তাঘাটে বলে ফেললে কলকাতার রাস্তায় হয় সকলে উন্মাদ ভাববে, নয়তো ভাববে মস্করা করছে। না ভাবার কারণ নেই। পৌষের শেষ থেকে যেভাবে গরম বাড়ছে তাতে শীতকালটাই এখন বছরে ১৫ দিনের হয়ে গেছে। ওই ১৫টা দিন কোনওক্রমে ঠান্ডাটা পড়ে। তারপর যে কে সেই! খাতায় কলমে অবশ্য কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫.৬ ডিগ্রি। এই পারদ খুব ঠান্ডা না হলেও গরম নয়। কিন্তু সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি ছুঁয়েছে। ফলে বেলা বাড়লে এই মাঘের শুরুতেও কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছে।
পশ্চিমী ঝঞ্ঝা দাপটের সঙ্গে ব্যাটিং করছে। ফলে থমকে গেছে উত্তুরে হাওয়া। যা ক্রমশ তাপমাত্রার পারদ চড়িয়ে দিচ্ছে। আবহাওয়া দফতর সেই ব্যাখ্যাই দিচ্ছে। পশ্চিমী ঝঞ্ঝা কাটলে তারপর হয়তো শীত পড়তে পারে। তারও কোনও গ্যারান্টি নেই। তাবলে মাঘের শুরুতেই ঠান্ডা উধাও! সত্যিই কিন্তু তাই হয়েছে। শুক্রবার অনেকেই বেলার পর রাস্তায় পকেট থেকে রুমাল বার করে কপালের ঘাম মুছেছেন। গায়ে গরম জামা পড়ে যাঁরা রাস্তায় বার হওয়ার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন, তাঁরা রাস্তার মধ্যেই তা খুলে হাতে নিয়ে নেন। অনেক বাড়িতেই এদিন দুপুরে কিছুক্ষণের জন্য হলেও ফ্যান ঘুরেছে।
এ বছর শীত পড়েছে পয়লা পৌষ। আর পৌষ শেষের আগেই তা জানান দিয়েছে এবারের মত বিদায়। অনেকেই বলছেন মাঘের শুরুতেই যদি এই অবস্থা হয় তাহলে পরে কী হবে! এদিন কিন্তু আকাশে বাতাসে বেশ একটা বসন্তের পরশ টের পেয়েছেন সকলে। যেটুকু শীত নামক বস্তু টিকে আছে তা রাতে। রাতের দিকে কিছুটা ঠান্ডা টের পাওয়া যাচ্ছে। ভোরেও ঠান্ডার স্পর্শটা থাকছে। কিন্তু বেলা বাড়লেই গরম। এই পরিস্থিতি বদলে আর একবার কী ঘুরে আসবে শীত? আপাতত এটাই লাখ টাকার প্রশ্ন।