বৈশাখের শুরুতেই কালবৈশাখীর স্বস্তি পেলেন রাজ্যবাসী। তাও আবার একেবারে শনিবাসরীয় সন্ধ্যায়। যাকে বলে সোনায় সোহাগা! তবে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাও ঘটেছে। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে একটি পুকুরে মাছ ধরার সময়ে বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। পরে দমকল কর্মীরা এসে দেহগুলি উদ্ধার করেন। এদিন কলকাতা সহ পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ২ বর্ধমান, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর দিনাজপুর প্রবল ঝড় হয়েছে। ঝড় হয়েছে রাজ্যের অন্যান্য জেলাতেও। এদিন সন্ধের মুখেই প্রবল গতিতে ঝড় আছড়ে পড়ে বিভিন্ন এলাকায়। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি ছিল ৭৬ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। ঝড়ের পরপরই শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি। পুরুলিয়ায় বৃষ্টির সঙ্গে ছিল শিলা পড়ার দাপট। শিলাবৃষ্টিতে রাস্তাঘাট, বাড়ির ছাদ, বারান্দা সবই শিলায় ভরে যায়। বাঁকুড়ায় এদিন সন্ধে ৬টা ১০ থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। চলে প্রায় আধঘণ্টা। ঝেঁপে বৃষ্টিতে বাঁকুড়া জুড়ে তাপমাত্রার পারদ এক ধাক্কায় অনেকটা নেমে যায়। স্বস্তি পান বাঁকুড়াবাসী। হাওড়াতেও এদিন প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। তবে হাওড়া শাখায় ট্রেন চলাচল তারজন্য ব্যাহত হয়নি। কিন্তু হাওড়া শাখা রেহাই পেলেও শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার যাত্রীরা এদিন প্রবল সমস্যায় পড়েন। বারুইপুর-ক্যানিং শাখায় ওভারহেড তারে গাছ পড়ে বিপত্তি দেখা দায়। বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। একই অবস্থার শিকার লক্ষ্মীকান্তপুর শাখাও। এই শাখাতেও ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে অনেকেই বৃষ্টি মাথায় করেই সড়কপথে বাড়ি ফেরার চেষ্টা চালান। এদিন কলকাতাতেও বৃষ্টি হয়েছে। তবে কয়েকটি জায়গায়। অন্যত্র ছিটেফোঁটা। যখন বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, হাওড়া ভেসে যাচ্ছে, তখনও কলকাতায় জনজীবন আর পাঁচটা দিনের মতই গড়িয়েছে। এখানে ঝড় শুরু হয়েছে অনেক পরে। তবে ঝড়ের দাপট ছিল বেশ। ফলে অনেক জায়গায় গাছ ভেঙে পড়ে। হরিশ মুখার্জী রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, পার্ক সার্কাস সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় গাছ উপড়ে যানচলাচল ব্যাহত হয়। তবে পুরকর্মীরা তৎপরতার সঙ্গে গাছ সরানোর কাজে হাত লাগান। এদিকে নিমতলা শ্মশানঘাটের কাছে চক্ররেলের ওভারহেড তারে গাছ ভেঙে পড়ায় চক্ররেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উত্তর দিনাজপুরে গত রাতে ভাল বৃষ্টির পর এদিন দুপুর থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শনিবারের পর রবিবারও কালবৈশাখীর সম্ভাবনা রয়েছে। সঙ্গে থাকছে বৃষ্টির সম্ভাবনাও। ফলে রবিবারে একটা দুরন্ত ছুটি উপভোগ করতে কোমরবেঁধে তৈরি রাজ্যবাসী।