প্রবল গরম আর প্যাচপ্যাচে ঘামে সপ্তাহের কাজের দিনগুলো কাটানোর পর অবশেষে এল সপ্তাহান্ত। এল প্রাণ জুড়নো বৃষ্টিও। যা এককথায় শনিবাসরীয় সন্ধেটাকে এক লহমায় মজলিশি চেহারা দিল। এদিন যে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হবে তার পূর্বাভাস আগেই দিয়েছিল আবহাওয়া দফতর। সেকথা মিলিয়ে পুরুলিয়ায় প্রবল ঝড় আর সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয় বেলা দেড়টা নাগাদ। যদিও তখন কলকাতার আকাশে রোদ ঝলমল করছিল। ক্রমশ ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিতে প্রবল ঝড় এগোতে থাকে বৃষ্টিকে সঙ্গী করে। পশ্চিম বর্ধমান হয়ে ক্রমশ বীরভূম, বাঁকুড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, নদিয়া, হুগলি হাওড়া হয়ে জলভরা কালো মেঘ হুহু করে ঢুকতে থাকে কলকাতায়। বিকেল ৪টের মধ্যে কলকাতার আকাশ কালো মেঘে ভরে যায়। সঙ্গে প্রবল ঝোড়ো হাওয়ার দাপট। কিছুক্ষণের ঝড়ের পরই শুরু হয় বৃষ্টি। একটানা প্রবল বৃষ্টিতে দ্রুত স্বস্তির আবহাওয়া জড়িয়ে ধরে গোটা শহরটাকে। ঠান্ডা বাতাস, সঙ্গে শীতল জলের ধারায় শেষ বৈশাখের পচা গরম নিমেষে ভ্যানিস। শনিবার হওয়ায় গোটা শহরটাকে দুপুরের পর থেকে গ্রাস করে ছুটির আমেজ। সেই আমেজকে যেন একলাফে অনেকগুণ বাড়িয়ে দিল এই স্বস্তির বৃষ্টি। যারজন্য বেশ কিছুদিন ধরেই হাপিত্যেশ করে অপেক্ষা করছিলেন শহরবাসী। শুধু কলকাতা নয় চুটিয়ে ঝড় বৃষ্টি হয়েছে দুই ২৪ পরগনাতেও। এদিকে ঝড়ের জেরে অনেক জায়গায় গাছ পড়ে বিপত্তি হয়। বাঁকুড়া সহ বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে আচমকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে এলাকা। আসানসোলের জামুড়িয়ায় বাজ পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বাজ পড়ে ২ ব্যক্তির মৃত্যুর খবর মিলেছে সালানপুর থেকেও। কলকাতাতেও অনেক রাস্তায় গাছ উপড়ে যানচলাচল বিঘ্নিত হয়। আসানসোল সহ অনেক জায়গায় প্রবল বৃষ্টিতে জল দাঁড়িয়ে যায়। সমস্যা হয় যানচলাচলে। এদিকে আগামিকাল রাজ্যে বেশ কিছু পুরনির্বাচন রয়েছে। প্রবল গরমে নির্বাচন সবসময়েই ভোটকর্মী বা প্রশাসনিক কর্মীদের জন্য কষ্টের। কষ্টের ভোটদাতাদের জন্যও। এদিনের বৃষ্টি সেই কষ্ট বেশ কিছুটা লাঘব করল সন্দেহ নেই। এই ঝড় বৃষ্টি এদিন গোটা রাজ্যেই কমবেশি হয়েছে। অনেকেই শেষ কদিন রাতে গরম আর ঘামে শান্তিতে ঘুমোতে পারেননি। তাঁরা অন্তত এদিন রাতে শান্তিতে ঘুমোতে পারবেন একথা না বললেও বুঝতে অসুবিধে নেই।