চরম গরমে নাজেহাল রাজ্যবাসী। রাজ্যের দক্ষিণ আর পশ্চিমের জেলাগুলির অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। তাপমাত্রার পারদ গত ৩-৪ দিনে শুধুই চড়েছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চড়েছে আপেক্ষিক আর্দ্রতা। ফলে গরমে গলদঘর্ম দশা। ভ্যাপসা গরমে না থাকা যাচ্ছে ঘরে, না বাইরে। এদিন হাওড়া স্টেশনের কাছে গরমে এক বৃদ্ধ অসুস্থ হয়ে রাস্তায় পড়ে যান। বেশ কিছুক্ষণ পড়ে থাকার পর পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। রাজ্যে এভাবে রাস্তায় গরমে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা এবার প্রথম ঘটল। গরমে নাজেহাল দুই মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান। সর্বত্রই এদিন পারদ ঘোরাফেরা করেছে ৩৯ ডিগ্রি থেকে ৪০ ডিগ্রির মধ্যে। এদিকে পশ্চিমাঞ্চল যখন জ্বলছে, তখন কিছুটা স্বস্তি দিয়ে এদিন বৃষ্টি নামে বীরভূমে। সকালে চরম গরম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামে। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। স্বস্তির বৃষ্টিতে কার্যতই প্রাণ জুড়োয় বীরভূমবাসীর। বৃষ্টি হয়েছে মুর্শিদাবাদেও। বৃষ্টি যথেষ্ট জোরেই হয়েছে। এখানেও স্বস্তি পেয়েছেন মানুষজন। পূর্ব বর্ধমানে বেলার প্রবল বৃষ্টিতে অনেক জায়গায় জল পর্যন্ত দাঁড়িয়ে যায়। এই ৩ জেলাতেই বহু মানুষকে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসে ভিজতে দেখা গেছে। ছাদে ছাদে মহিলারাও গা ভিজিয়েছেন শীতল বারিধারায়। অনেকের হাতে ছাতা থাকা সত্ত্বেও তা না খুলে বৃষ্টিতে ভিজেছেন দেদার। এরমধ্যেই পুরুলিয়ায় সারাদিন অসহ্য গরম থাকার পর বিকেলের দিকে আকাশে মেঘ জমে ঝড় শুরু হয়। তখনই একই পরিবারের ২ মহিলা কুয়ো থেকে জল নিয়ে ফিরছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত তখন ঝড়ে একটি বিশাল গাছ তাঁদের ওপর ভেঙে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুজনের। এদিন ঝড় হয়েছে অন্যত্রও। উত্তর ২৪ পরগনার কোথাও কোথাও দু-এক পশলা বৃষ্টির খবর মিললেও মূলত হয়েছে ঝড়। অনেক জায়গায় ধুলোঝড়ে সমস্যায় পড়েন মানুষজন। তবে আকাশ প্রধানত মেঘলা থাকায় কিছুটা হলেও এ জেলায় স্বস্তিরই বাতাবরণই ছিল। কলকাতাবাসীকে অবশ্য মেঘলা আকাশটুকু নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। ঝড় বা বৃষ্টির কোনওটাই শিকেয় ছেঁড়েনি। তবে কিছুটা ঠান্ডা বাতাস বওয়ায় অসহ্য গরম থেকে সামান্য হলেও রেহাই মিলেছে।