শরৎ শেষ। বাতাসে হাল্কা উত্তুরে হাওয়া। সকালের দিকে ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব। আর রাতের দিকে অল্পস্বল্প হিম পড়া। এটাই কালীপুজোর চেনা ছবি। আলোর উৎসবের মেজাজটাই তৈরি করে এই আবহাওয়া। কিন্তু এবার সেই হেমন্তের পরশ ভাসিয়ে দিল বর্ষার দাপট। একের পর এক নিম্নচাপের জেরে বর্ষা এখনও ব্যাটিং চালিয়ে যাচ্ছে। ভাসিয়ে দিচ্ছে একের পর এক উৎসবের আনন্দ। ওড়িশা উপকূলে ঘনীভূত একটি নিম্নচাপের জেরে আপাতত বৃষ্টিতে ভিজছে দক্ষিণবঙ্গ। আলোর উৎসব মাটি করে বৃষ্টি এখন সবচেয়ে বড় ভিলেন।
কালীপুজোর সকাল থেকেই বদলাচ্ছিল আকাশের চেহারা। মাঝে মধ্যে বৃষ্টিও হচ্ছিল। দুপুর গড়ানোর পর আকাশ ক্রমশ কালো মেঘে মুখ ঢাকতে শুরু করে। আশঙ্কার সেই কালো মেঘে অশনি সংকেত স্পষ্ট দেখেছিলেন শহরবাসী। সন্ধে নামতে কলকাতায় ঝিরঝিরে বৃষ্টি মাঝেমধ্যেই হলেও জেলায় জেলায় বৃষ্টি তার প্রাবল্য বাড়ায়। সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়ার দাপট। কলকাতায় একটানা বৃষ্টি শুরু হয় শেষ রাত থেকে। এদিন সকাল সাতটাতেও মনে হচ্ছিল সবে ভোর হল। সঙ্গে একটানা একঘেয়ে বৃষ্টিতে একটা প্রবল বর্ষার গন্ধ। এদিন শুধু কলকাতা নয় হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, বীরভূম, বাঁকুড়া, দুই বর্ধমান, দুই মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা সর্বত্রই বৃষ্টি হয়েছে নাগাড়ে। অনেক জায়গায় জল দাঁড়িয়ে গেছে। কালীপুজোয় রাত জাগা হয়েই যায়। অনেকে হয়তো পুরো রাত জাগেন না। কিন্তু কিছুটা রাত তো হয়ই। ফলে এদিন সকাল থেকে রাস্তায় তেমন লোকজন ছিল না। ভিড় ছিল কম। কলকাতায় বাস বা অন্যান্য গাড়িও ছিল কম।
এদিকে হাওয়া অফিস জানিয়েছে, নিম্নচাপের প্রভাবে কালীপুজোর পরদিন অর্থাৎ শুক্রবার তো বটেই ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার দিনও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বঙ্গোপসাগরের ওপর সৃষ্টি হওয়া এই নিম্নচাপটির গতিমুখ উত্তরপূর্ব দিকে। সেদিকে নিম্নচাপ যত তাড়াতাড়ি সরবে ততই তাড়াতাড়ি আকাশ পরিস্কার হয়ে রোদের দেখা মিলবে। দুপুরের পর নিম্নচাপটি দুর্বল হচ্ছে বলে জানা গেলেও বৃষ্টি কিন্তু চলেছে অবিরাম। ফলে বিভিন্ন জেলায় জল বাড়ার একটা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। সেকথা মাথায় রেখে সেচ দফতরের পক্ষ থেকে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। নজর রাখা হচ্ছে গোটা পরিস্থিতির উপর।
ঝাড়খণ্ডে প্রবল বৃষ্টি পশ্চিমবঙ্গের অনেক নদীতে প্লাবনের জন্ম দেয়। এই নিম্নচাপেও ঝাড়খণ্ড ভাসার সম্ভাবনা প্রবল। সেকথা মাথায় রেখে সতর্ক রয়েছে সেচ দফতর।