তৃণমূলের ঝোড়ো ইনিংস, রাজ্য জুড়ে সবুজ ঝড়
কার্যত তৃণমূল ঝড়ের সামনে খড়কুটোর মত উড়ে গেল বিজেপি। এগিয়ে থাকার নিরিখে প্রায় প্রতিটি বুথ ফেরত সমীক্ষার সংখ্যাকেও ছাপিয়ে গেল তৃণমূল।
সকালে গণনা শুরুর পর প্রায় ঘণ্টা দেড়েক এগিয়ে থাকার নিরিখে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সমানে সমানে টক্কর চলছিল। যা দেখে অনেকেই মনে করেছিলে যা এতদিন ধরে শোনা যাচ্ছিল যে এবার রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে, সেটাই হচ্ছে।
কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূলের এগিয়ে থাকার ব্যবধানও বাড়তে থাকে। ক্রমশ তৃণমূলের তুলনায় পিছিয়ে পড়তে থাকে বিজেপির এগিয়ে থাকা। আর সেই ব্যবধান সময় যতই এগিয়েছে ততই বেশি হয়েছে।
তৃণমূল কার্যত ২০০-র বেশি আসনে এগিয়ে যায়। সেখানে ৩ অঙ্কে পৌঁছতে পারেনি বিজেপির এগিয়ে থাকা আসনের সংখ্যা। যদিও এটাও মেনে নিতে হবে যে গত বিধানসভায় ৩টি আসন থাকা বিজেপি সেই দিক থেকে দেখতে গেলে ভাল ফল করেছে।
অন্যদিকে মুখ থুবড়ে পড়েছে বাম, কংগ্রেস জোট। কার্যত ধুয়ে মুছে গেছে বাংলার একসময়ের এই ২ প্রধান প্রতিপক্ষ। কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত মুর্শিদাবাদ ও মালদা।
এই ২ জেলাতেই কার্যত এদিন নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে কংগ্রেস। বামেরা এবার তরুণ মুখে জোর দিলেও ফলাফলে তার কোনও সদর্থক ছাপ পড়েনি।
বিজেপি ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের নিরিখে যতগুলি বিধানসভায় এগিয়ে ছিল তার মধ্যে প্রায় ৪৪টির মত আসনে তারা এবার হেরেছে। অন্যদিকে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের নিরিখেই তৃণমূল পিছিয়ে থাকা ৫০টি আসনে জয় পেয়েছে। এটা অবশ্যই বড় ফারাক গড়ে দিয়েছে।
এছাড়া হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা ও জঙ্গলমহলে বিজেপির এমন ধরাশায়ী অবস্থা গেরুয়া শিবিরকে ৩ অঙ্কেও পৌঁছতে দিল না। কার্যত মিলে গেল তৃণমূলের ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের বক্তব্য। প্রশান্ত আগেই দাবি করেছিলেন যে বিজেপি এ রাজ্যে ৩ অঙ্কে পৌঁছতে পারবেনা। তাই কিন্তু মিলে গেল।
এদিকে বিজেপির এবারের স্লোগান ছিল ২০০ পার। কিন্তু বাস্তবে ২০০ পার হলও বটে, কিন্তু তা বিজেপির পক্ষে গেলনা, গেল তৃণমূলের পক্ষে।