শূন্য হাতে ফিরল কংগ্রেস, ঝুলি শূন্য বামেদেরও
বাম কংগ্রেস জোট কত আসন জিতবে এটাও কিন্তু এবার বিধানসভা নির্বাচনে যথেষ্ট আলোচ্য ছিল। কিন্তু সেখানে কার্যত যেটুকু ছিল তাও হারাল বাম-কংগ্রেস।
রাজ্য রাজনীতি এক সময় আবর্তিত হত বাম ও কংগ্রেসের লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে। তারপর কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল আসে। কিন্তু তাতে বাম বা কংগ্রেসের অস্তিত্বের সংকট তৈরি হয়নি।
এমনকি গত বিধানসভা নির্বাচনেও বাম কংগ্রেস জোট কিছুটা হলেও ভোটের ময়দানে তাদের মর্যাদা রক্ষায় সমর্থ হয়েছিল। কিন্তু ২০২১-এর ভোটে সব মর্যাদা ধুলোয় মিশে গেল। কার্যত একটাও আসন পেল না বাংলার এক সময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ ২ দল।
বাম কংগ্রেস জোটে এবার শরিক হয়েছিল আইএসএফ। বাম কংগ্রেস জোট এবার শূন্য হাতেই ফিরেছে। জোটের মুখ রেখেছে একমাত্র আইএসএফ।
আইএসএফ ভাঙড় আসনটি জিতেছে। ফলে জোটের পক্ষে রয়েছে ১টি আসন। কিন্তু জোটের মূল ২টি অংশ বাম ও কংগ্রেস কিন্তু সেই ১টিও ঝুলিতে বন্দি করতে পারেনি।
কংগ্রেসের এ রাজ্যে শক্ত ঘাঁটি যদি বলা হয় তাহলে তা মুর্শিদাবাদ ও মালদা। বরকত গনি খান চৌধুরীর মালদা ২০১৬ সাল পর্যন্তও মমতার প্রতি মুখ ফিরিয়েছিল। এবার প্রচারে গিয়ে মমতা সেই ক্ষোভ লুকিয়ে রাখেননি।
তিনি বলেন মালদা বাম, কংগ্রেস, বিজেপি সকলকে দিয়েছে। কেবল তাঁকে ফজলি আম খাওয়ায়নি। এবার তিনি আশা করছেন মালদা তাঁকে হতাশ করবে না।
মালদা হতাশ করেনি। শুধু হতাশ করেনি বললেও ভুল বলা হয়। উজাড় করে দিয়েছে। মালদার সব আসনই গেছে তৃণমূলের ঝুলিতে। যেখান থেকে ৫ বছর আগেও ১টি আসন শিকেয় ছেঁড়েনি তৃণমূলের।
কংগ্রেসের অন্য শক্ত ঘাঁটি মুর্শিদাবাদ। এখানে কংগ্রেসের মুখ অধীররঞ্জন চৌধুরী। সেই অধীর গড়ে যে কংগ্রেসের এমন শোচনীয় হাল হবে তা বোধহয় অধীরবাবু নিজেও আন্দাজ করতে পারেননি। এবার মুর্শিদাবাদের সবকটি আসন জিতে নিয়েছে তৃণমূল। যা কার্যত তৃণমূলের এবারের বিপুল জয়ে একটা বড় ছাপ রেখে দিল।
বামফ্রন্ট রাজ্যের সর্বত্রই কিছু না কিছু শক্তি ধরে। কিন্তু সেই বামেদের একজন প্রার্থীও জিতবেন না এটা বোধহয় বামেরা ভাবতেও পারেনি। এই প্রথম বামেরা বিধানসভা নির্বাচনে একটিও আসন জিততে পারল না। যা কিন্তু বামেদের এ রাজ্যে অস্তিত্ব বিপন্ন করে দিল।
এবার কিন্তু বিজেপি-র উত্থান স্পষ্ট করে দিল এ রাজ্যে শাসনে তৃণমূল আর বিরোধী দল হিসাবে বিজেপি থাকল। আর কোনও দলের অস্তিত্বই সে অর্থে রইল না।