কোনও প্রলোভনেই বিক্রি না হওয়ার প্রতিশ্রুতি বাম প্রার্থীর
খড়গপুর আইআইটি থেকে গণিতে ডক্টরেট করলেও রাজনীতিকেই পেশা হিসাবে বেছে নেন। বর্তমানে তিনি সিপিআইয়ের সর্বক্ষণের কর্মী।
রাজ্য রাজনীতিতে পরিচিত মুখ উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার বিধানসভা কেন্দ্রের সিপিআই প্রার্থী শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়। বামফ্রন্ট আমলে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত মন্ত্রী ছিলেন শ্রীকুমারবাবু। ৩ বার ইটাহার কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
আগামী ২২ এপ্রিল ইটাহারে বিধানসভা নির্বাচন। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেন করেন তৃণমূল প্রার্থী অমল আচার্য।
সিপিআই প্রার্থী শ্রীকুমারবাবু জানালেন ছোটবেলা থেকেই অভিভাবকদের প্রভাবে তিনি কমিউনিজমে দীক্ষিত। ২ কাকা কমিউনিস্ট পার্টির কর্মী ছিলেন। রাজনৈতিক শিক্ষার হাতেখড়ি তাঁদের কাছেই।
১৯৬৯ সালে ছাত্রজীবনে শ্রীকুমারবাবু ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে পড়েন। খড়গপুর আইআইটি থেকে গণিতে ডক্টরেট করলেও রাজনীতিকেই পেশা হিসাবে বেছে নেন। বর্তমানে তিনি সিপিআইয়ের সর্বক্ষণের কর্মী।
সকাল ৮টা নাগাদ প্রচারে বেরচ্ছেন শ্রীকুমারবাবু। রাতে কোনও কোনওদিন ১১টা পর্যন্ত প্রচার করছেন। ৬৭ বছরের শ্রীকুমারবাবু ক্লান্তিহীন। ২১-এর রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে শ্রীকুমারবাবুর মত, এবারের নির্বাচনে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কথাই হচ্ছে না। বরং বিজেপি ও তৃণমূলের নেতৃত্বে বিভাজনের রাজনীতি জোরদার হয়ে উঠেছে।
এপর্যন্ত কোনও জনসভা করেননি শ্রীকুমারবাবু। খোলা গাড়িতে ইটাহার বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত গ্রামাঞ্চলে ঘুরে প্রচার চালাচ্ছেন। ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে কোনও প্রলোভনের হাতছানিতেই বিক্রি হবেন না।
শ্রীকুমারবাবুর দাবি, তাঁর আমলে ইটাহারে উল্লেখযোগ্য কাজ হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ বলছেন, বিএড কলেজ হয়েছে, ১৯টি জুনিয়র স্কুল, ২৪টি মাধ্যমিক এবং ২৪টি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল ছাড়াও এলাকায় শিক্ষার উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়িত করা হয়েছে। বাম আমলে ইটাহারে গড়ে তোলা হয়েছে সেন্ট্রাল সিভিল ডিফেন্স ইন্সটিটিউট।
প্রচারে শ্রীকুমারবাবুর মূল বক্তব্য হল হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজনের রাজনীতির বিরোধিতা করুন। তীব্র বিরোধিতা করুন এনআরসির।
শ্রীকুমারবাবুর কথায়, হিন্দু-মুসলমান বিভাজনের রাজনীতিকে রুখতে না পারলে আগামীদিনে বাংলার সর্বনাশ ঘটবে।
ইটাহারে এখনও তীব্র গরম পড়েনি। তবে ৬৭ বছরের শ্রীকুমারবাবু খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সাবধানী। এক্ষেত্রে নিয়ম মেনে চলছেন।
জানা গেল, সকালে রুটি ও আলুভাজা খেয়ে প্রচারে বেরচ্ছেন। দুপুরে ভাতের পাট নেই। পরিবর্তে দুপুরের খাবার হিসেবে বরাদ্দ শুকনো মুড়ি এবং কয়েক টুকরো শসা। আর রাতে খাচ্ছেন অল্প পরিমাণ সিদ্ধ ভাত।
শ্রীকুমারবাবু আরও জানালেন, প্রচারে বেরিয়ে ভোটারদের কাছে লাগাতার তিনি রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার কথাই বলছেন। প্রচার গাড়িতে ফ্লেক্সেও লেখা আছে, ‘বিক্রি হব না।’