তাঁর কথা সবাই শুনছেন, এটাই বড় ভরসা ডাক্তারবাবুর
৬০-এর দশকে খাদ্য আন্দোলনের সময় তিনি ছিলেন স্কুলছাত্র। দরিদ্র মৎস্যজীবী পরিবারের সন্তান রঞ্জন মণ্ডল কৈশোরেই সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেছেন।
বাংলায় ১৭ তম বিধানসভা নির্বাচনে তফশিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হিঙ্গলগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিআই প্রার্থী রঞ্জন মণ্ডল। আগামী ১৭ এপ্রিল এই কেন্দ্রে নির্বাচন। ৬৬ বছর বয়সী রঞ্জনবাবু পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। এখন জোরকদমে এলাকায় প্রচার চালাচ্ছেন তিনি।
উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ কেন্দ্রের সিপিআই প্রার্থী রঞ্জনবাবুর অভিযোগ, গত ১০ বছর যাবত শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এলাকার মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে। এর ফলে বিরোধীরা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না। ভোটের আগেও ভয়ের পরিবেশ কায়েম রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
রঞ্জনবাবুর দাবি, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে হিঙ্গলগঞ্জ কেন্দ্র থেকে তাঁর জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ প্রচারে বেরিয়ে মানুষের কাছ থেকে বেশ ভালোই সাড়া পাচ্ছেন। উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনে হিঙ্গলগঞ্জ কেন্দ্রে ভোটের হার ছিল ৮৪ শতাংশ।
হিঙ্গলগঞ্জ কেন্দ্রে সিপিআই প্রার্থী রঞ্জন মণ্ডলের লড়াই তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবেশ মণ্ডল এবং বিজেপি প্রার্থী নিমাই দাসের বিরুদ্ধে। এছাড়া এই কেন্দ্রে একাধিক নির্দল প্রার্থীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবেশ মণ্ডল। সেবছর তিনি সিপিআই প্রার্থী আনন্দময় মণ্ডলকে ৩০ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করেন। হিঙ্গলগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রটি বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।
দিনে ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা প্রচার করছেন রঞ্জনবাবু। জানালেন, ৬০-এর দশকে খাদ্য আন্দোলনের সময় তিনি ছিলেন স্কুলছাত্র। দরিদ্র মৎস্যজীবী পরিবারের সন্তান রঞ্জন মণ্ডল কৈশোরেই সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেছেন। এরপর কলকাতায় হোমিওপ্যাথি পড়তে এসে কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হন।
জানা গেল, এর আগে টাকি পৌরসভার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন রঞ্জনবাবু। তবে এই প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়ালেন তিনি। চিকিৎসক মানুষ। ফলে শরীর সচেতন। শরীর সুস্থ রাখতে কিছু সচেতনতা অবলম্বন করেছেন। বিশেষত খাওয়াদাওয়ার ক্ষেত্রে।
দুপুরে সাদা ভাত ও সিদ্ধ খাবার খাচ্ছেন। জল বেশি করে খাচ্ছেন। প্রচারের মাঝে কখনও কখনও ফল খাচ্ছেন। আর রাতের জন্য বরাদ্দ রুটি ও তরকারি।
একদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের সমালোচনা করছেন রঞ্জনবাবু। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতিগুলির প্রতিবাদ করছেন প্রচারে বেরিয়ে। আর ভোটারদের কাছে তুলে ধরছেন বর্তমান পরিস্থিতিতে কমিউনিস্ট পার্টির প্রাসঙ্গিকতা।
রঞ্জনবাবু জানালেন, তৃণমূল কংগ্রেসের হুমকি সত্ত্বেও গ্রামবাসীরা আগ্রহ সহকারে তাঁর বক্তব্য শুনছেন। এতেই আশার আলো দেখছেন তিনি।