শনিবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছিল বছর ১৫-র কিশোরী পূজা দেবনাথ। কিশোরীর মা মিঠু দেবনাথ তখনও বাড়ি এসে পৌঁছননি। সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুর থানার বিশরআটি এলাকার বাসিন্দা শেখর দেবনাথ। পুলিশ সূত্রের খবর, ফাঁকা বাড়িতে মেয়ের মাথায় প্রথমে ভারী কাঠের টুকরো দিয়ে আঘাত করে শেখর। তারপর মেয়ের গলায় শাড়ির ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করে সে। স্ত্রী বাড়িতে ঢুকলে একই কায়দায় তাঁকেও খুন করে শেখর। তারপর প্লাস্টিকে মুড়ে স্ত্রী ও মেয়ের নিথর দেহ ঘরের খাটের তলায় চালান করে দেয়। পুলিশের দাবি, জেরায় গত শনিবারের রুদ্ধশ্বাস সেই হত্যাকাণ্ডের কথা নিজের মুখে স্বীকার করেছে অভিযুক্ত। ধৃতের বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া গেছে মদের বোতল ও বিরিয়ানির প্যাকেট। পুলিশের ধারণা, ঠান্ডা মাথায় বউ ও মেয়েকে খুন করে ২ দিন ধরে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিল অভিযুক্ত। ঢালাও মদ আর বিরিয়ানিতে জমিয়ে চলছিল দিনযাপন।
ধৃতের প্রতিবেশিদের দাবি, লটারি খেলার নেশায় বাজারে অনেক ধারদেনা হয়ে গিয়েছিল শেখর দেবনাথের। চিটফান্ড সংস্থায় টাকা রাখার জন্য অনেক টাকা লোকসানও হয়েছিল তার। তারওপরে সেলাইয়ের কারবারও মুখ থুবড়ে পড়েছিল। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, সেই অবসাদ থেকেই সম্ভবত নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে ফেলে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা শেখর। তবে কেন মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীনই এমন চরম পথ বেছে নিল সে? দেনা, নাকি অন্য কোনও কারণে পাড়ার আপাত নির্বিবাদী শেখর দেবনাথ অনায়াসে খুন করে ঘরে ফেলে রাখল স্ত্রী ও মেয়ের দেহ? হাবড়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনার তদন্তে নেমে এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।