State

দুষ্কৃতি তাণ্ডব, সংঘর্ষ, গুলি, বোমাবাজি, ব্যালট লুঠ, ভোট ঘিরে দিনভর অশান্ত রাজ্য

নদিয়ার শান্তিপুরের বিবেকানন্দ নগরের ১২ নং বুথে ভোট চলছিল সকাল থেকে। অভিযোগ বেলার দিকে বহিরাগতদের সশস্ত্র বাইকবাহিনী ভোটারদের পথ আটকানোর চেষ্টা করে। এই সময়ে গ্রামবাসীরা রুখে দাঁড়ান। পাল্টা গ্রামবাসীরা এককাট্টা হয়ে বাইক বাহিনীকে তাড়া করেন। বেগতিক বুঝে বাইক নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে বহিরাগতরা। সকলকে ধরতে না পারলেও বেশ কয়েকজনকে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। ১২টি বাইকে আগুন ধরিয়ে দেন তাঁরা। শুরু হয় বহিরাগতদের গণপিটুনি। পরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। গণপিটুনিতে ২ জন গুরুতর আহত। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুথে বেশ কিছুক্ষণের জন্য ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে।

কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের ২৭ নং বুথে এদিন ভোট শুরুর পর উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ব্যালট বক্স লুঠের চেষ্টা করে দুষ্কৃতিরা। বুথের বাইরে ছড়িয়ে দেওয়া হয় ব্যালট। পরে আরও পুলিশ এনে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনা হয়।


হাওড়ার উলুবেড়িয়ার হাটগাছায় বেলার দিকে ব্যালট বাক্সে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে। শুরু হয় বোমাবাজিও। ফলে বন্ধ হয়ে যায় ভোটগ্রহণ। ভোটাররা বাড়ি ফিরে যান। হাওড়ারই পারোলা গ্রামের কাছেও ব্যাপক বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। নির্দল প্রার্থীর সমর্থকেরা পুলিশি নিস্ত্রিয়তার অভিযোগে পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। ব্যাপক বোমাবাজিতে প্রথমে পিছু হঠলেও পরে গোটা এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয় পুলিশ। ফের শুরু হয় ভোটগ্রহণ।

হুগলির উত্তরপাড়ায় বুথ জ্যাম করার অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে। এখানে বেলার দিকে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর সংগ্রহ করতে গেলে দুষ্কৃতিদের হাতে নিগ্রহের শিকার হন সাংবাদিকরা। ক্যামেরা ভেঙে দেওয়া হয়।


পাঁশকুড়ার গোবিন্দপুরের একটি বুথে ভোটারদের পিস্তল দেখিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে। এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করতে বোমাবাজিও হয়। অভিযোগ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির পর অবাধে এখানে ছাপ্পা ভোট মারে দুষ্কৃতিরা।

অন্যদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর চরবিদ্যায় ভোটকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও নির্দল কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। গুলি চলে। গুলিবিদ্ধ হন তৃণমূল কর্মী দুরন্ত মণ্ডল। এই ঘটনায় নির্দল কর্মীদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূল।

বীরভূমের ম‌যূরেশ্বরে তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে বেশ কিছুক্ষণ বিভিন্ন বুথে ভোটগ্রহণ থমকে যায়।

এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন কোণা থেকে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উত্তেজনার খবর মিলেছে। কোথাও ব্যালট ছেঁড়া, তো কোথাও ব্যালট বাক্স ভাঙার অভিযোগ ওঠে। কোথাও বা ব্যালট বাক্স লুঠ করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতিরা। অনেক জায়গায় ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে বিভিন্ন দলের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি লেগে যায়। ব্যাপক মারধরের ঘটনা ঘটে। বাঁশ, লাঠি নিয়ে একে অপরের দিকে তেড়ে যান তাঁরা। অনেকে আহত হন। সব মিলিয়ে এদিন কিন্তু আশান্তির ভোটই প্রত্যক্ষ করল বাংলা।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button