রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের জয়জয়কার অব্যাহত থাকবে তা আগেই যাবতীয় সমীক্ষা একবাক্যে মেনে নিয়েছিল। রাজ্যবাসী অত সমীক্ষা টমীক্ষা না বুঝলেও, সাধারণভাবেই বুঝতে পারছিলেন বাংলার গ্রাম এবারও থাকবে তৃণমূলের দখলে। ২ নম্বরে বিজেপি যে থাকছে তাও অনেকেই মেনে নিচ্ছিলেন। হয়েছেও তাই। কিন্তু সিপিএম সহ বাম দলগুলি বা কংগ্রেস কোথায়? যে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির উত্তর দিনাজপুরে তৃণমূল ঠিকমত দাঁত ফোঁটাতে পারেনি অনেকদিন, সেখানে কংগ্রেস একটাও জেলা পরিষদ আসন দখলে রাখতে পারল না! আবার রায়গঞ্জের সাংসদ এখন সিপিএমের মহম্মদ সেলিম। সেখানে বামেদের একটা দাপট অন্তত দেখতে পাওয়ার কথা। এই অবস্থায় জেলা পরিষদের ২১টা আসন গেল তৃণমূলের দখলে! বরং সেখানে বিজেপি ১টি আসন দখল করেছে। বামেদের দখলেও সাকুল্যে ১টিই।
কংগ্রেস ও বামেদের ভরাডুবির ছবিটা সব জায়গাতেই একই রকম। কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলেই অধিক পরিচিত মালদহ ও মুর্শিদাবাদ। সেখানে মুর্শিদাবাদে জেলা পরিষদের ২২টি আসনের মধ্যে ২১টিতেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। মাত্র ১টি দখলে রেখে মুখরক্ষা করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের আর এক শক্ত ঘাঁটি মালদহ। সেখানেও কিন্তু কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে। বরং মালদহে উল্লেখযোগ্যভাবে বিজেপির ফল ভাল। তৃণমূল এখানে দখলে রেখেছে এখনও পর্যন্ত ২৯টি জেলা পরিষদ আসন। বিজেপি পেয়েছে ৬টির দখল। ২টি গেছে কংগ্রেসের ঝুলিতে।
শুধু এই ৩টি জেলা বলেই নয়। বাম ও কংগ্রেসের কমবেশি একই অবস্থা রাজ্য জুড়েই। বরং তুলনামূলকভাবে বিজেপির ফল ভাল। রাজ্যে তৃণমূলের পরে অনেকটা পিছিয়ে থেকেও বিজেপি ২ নম্বরে। ৩ নম্বরে উঠে এসেছে নির্দল। যা অবশ্যই অবাক করেছে। কারণ যে রাজ্যে বাম, কংগ্রেসের মত দল প্রতিযোগিতার ময়দানে রয়েছে। সেখানে তাঁদের পিছনে ফেলে নির্দলের তৃতীয় শক্তি হিসাবে উঠে আসা কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ। আর বাম, কংগ্রেস? তাঁদের কিন্তু নতুন করে নিজেদের অস্তিত্বরক্ষায় লড়াই নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। অন্তত এমনই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা।