বিষে বিষে বিষক্ষয় হচ্ছে না। ফলে মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলছে ‘সাপ’। কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার যে নিয়ম প্রকৃতি এক সময় নিজেই করে দিয়েছিল, মানুষ সেটা নিজেরাই নষ্ট করে এখন তার খেসারত দিচ্ছে। আটকানো যাচ্ছে না বিষধর কালাচ সাপের বাড়বাড়ন্ত।
ভারতীয় উপমহাদেশের সবথেকে বিষধর সাপগুলির অন্যতম শাঁখামুঠি বা ব্যান্ডেড ক্রেট। বিভিন্ন এলাকায় একে রেট স্নেক বা ঢ্যামনা নামেও চেনা যায়। ছোবল নয়, এর এক কামড়ে আড়াই থেকে ৪ মিলিগ্রাম পর্যন্ত নিউরোটক্সিন মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। কালাচের মতো, এই বিষের প্রবেশও প্রাথমিকভাবে বোঝা যায় না। তারপর বমি, তলপেটে ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ হয়। কিন্তু সুখের বিষয়, পশ্চিমবঙ্গে গত ১০ বছরে শাঁখামুঠি সাপের মানুষকে কামড়ানোর কোনও ইতিহাস নেই। সময়টা আরও বেশি হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই, কারণ এরা মানুষের সংস্রব এড়িয়ে চলতেই পছন্দ করে। লাজুক এই সাপ বিপদ বুঝলে আক্রমণ তো দূরের কথা, কুণ্ডলীর মধ্যে মাথা গুটিয়ে নেয়। রাতে এরা বেশি স্বচ্ছন্দ বলে সর্প প্রবণ এলাকায় রাতে একটু সাবধানে চললেই এদের দেখা পাওয়া ভার।
শাঁখামুঠি মানুষের বন্ধু হতেই পারত, কারণ এদের প্রিয় খাবার কালাচ সাপ বা তার বাচ্চা। যেখানে শাঁখামুঠি যত বাড়বে, কালাচ তত কমবে, এটাই প্রকৃতির নিয়ম। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ঢ্যামনা বা শাঁখামুঠি দেখলে ভয়েই মানুষ তাদের মেরে ফেলেছে। এতে যে মানুষ কালাচের সংখ্যা বাড়িয়ে নিজেদের বিপদ নিজেরা ডেকে আনছে সেটা বোঝার বোধ হয় এবার সময় এসেছে।