দিনে দুপুরে টানটান সিনেমা দেখলেন কাঁথির মানুষজন। তবে কোনও হলে বসে সিনেমার পর্দায় নয়, একেবারে খোলা রাস্তার ওপর। পুলিশ খুনে অভিযুক্ত কর্ণ বেরাকে বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর সংশোধনাগার থেকে নিয়ে আসা হয় কাঁথি আদালতে। আদালত চত্বরে নামানোর পরই আচমকা পরপর বোমা পড়তে থাকে। ফলে হৈচৈ শুরু হয়। সেই ছুতোয় পালায় কর্ণ। সঙ্গে ছিল তার ২ সঙ্গী। বাইক নিয়ে পুলিশের নাগাল থেকে পালানোর চেষ্টা করে কর্ণ। কিন্তু বাইক কিছুতেই স্টার্ট নিচ্ছিল না। একটু চেষ্টার পরও বাইক চালু না হওয়ায় সেখান থেকে ছুটে পালায় কর্ণ বেরা।
ছুটতে ছুটতে কাঁথি বাজারের কাছে একটি বাড়িতে ঢুকে পড়ে সে। ভিড়ে ঠাসা এলাকায় কর্ণকে সেই বাড়িতে ঢুকতে দেখেন অনেকে। তাঁরাই পুলিশকে দেখিয়ে দেন কোন বাড়িতে কর্ণ গা ঢাকা দিয়েছে। সেই বাড়িটি দ্রুত ঘিরে ফেলে পুলিশ। তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলে। কিন্তু কর্ণ তাতে রাজি হয়নি। এদিকে এমন কাণ্ডে বাড়ির চারপাশ সাধারণ কৌতূহলী মানুষের ভিড়ে ভরে যায়। ফলে সেখান থেকে লুকিয়ে পালানোর কোনও রাস্তা কর্ণ বেরার কাছে ছিলনা। এদিকে পুলিশও দুম করে ভিতরে ঢুকতে পারছিলনা। কারণ কর্ণর হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল।
এভাবে প্রায় ১ ঘণ্টা ঘরে রুদ্ধশ্বাস নাটক চলার পর অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এই দুষ্কৃতি। তাকে ফের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনার কথা গোটা কাঁথি জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। কর্ণকে গ্রেফতারের পরও থানার সামনে উৎসাহী ঔৎসুক মানুষের ভিড় সামলাতে হিমসিম খেতে হয় পুলিশকে।
অনেক টানটান উত্তেজনার সিনেমায় এভাবে আদালত চত্বরে অভিযুক্তকে আনার পর কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে তার সঙ্গীরা তাকে বোমা মেরে গুলি চালিয়ে নিয়ে পালায়। কিন্তু সেটা সিনেমায় হয় বলেই জানতেন সাধারণ মানুষ। বাস্তবের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু এদিন কাঁথিতে যা ঘটল তা সিনেমাকেও ছাড়িয়ে গেল।