জগদ্দল থানা ভেঙে ভাটপাড়ায় একটি নতুন থানার উদ্বোধনের আগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ভাটপাড়া এলাকা জুড়ে শুরু হয় বোমা ও গুলির লড়াই। বোমা পড়েছে ও গুলি চলেছে মুড়িমুড়কির মত। কাঁকিনাড়া, ভাটপাড়া এলাকা জুড়ে পাড়ায় পাড়ায় বোমা পড়তে থাক। চলে গুলি। ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা কাজের দিনেও অনেকেই বাড়ির বাইরে বার হওয়ার সাহস পাননি। এদিনটা কাজ ফেলে বাড়িতেই থাকতে হয়েছে তাঁদের। কারণ বাড়ির আশপাশের রাস্তা তখন দুষ্কৃতিদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছিল। পুলিশ এসে অবস্থা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও গুলি, বোমার লড়াই কিন্তু থামেনি। বাধ্য হয়ে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে হয়। স্থানীয়দের দাবি পুলিশকে গুলিও চালাতে হয়।
পুলিশ, ব়্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স নামে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে। তবু বেলা পর্যন্ত মূল ঘোষপাড়া রোড বাদ দিয়ে গলি গলি থেকে গুলি, বোমার শব্দ ভেসে এসেছে। এলাকা জুড়ে লুকিয়ে আছে দুষ্কৃতিরা। তাদের ২ পক্ষের মধ্যে বিভিন্ন পাড়ায় লড়াই শুরু হয়ে যাচ্ছে। শুধু বৃহস্পতিবারই সকাল থেকে বোমা, গুলির লড়াইয়ে ৫ জন গুরুতর আহত হয়। তাদের মধ্যে ১ জনের বিএন বোস হাসপাতালে মৃত্যু হয়। ৪ জন জখম ব্যক্তির চিকিৎসা চলছে। এদিকে সকাল থেকে শুরু হওয়া লড়াই প্রচুর পুলিশ থাকা সত্ত্বেও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থেকেছে। টানা না চললেও মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন গলি থেকে বোমার শব্দ পাওয়া গেছে। দুপুরে বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশিও শুরু করে পুলিশ।
ভোটের পর থেকেই প্রবল উত্তপ্ত কাঁকিনাড়া, ভাটপাড়া। এলাকায় শান্তি ফেরাতে পুলিশের তরফে বেশ কয়েকবার শান্তি বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু অশান্তি অব্যাহত। যার প্রভাব পড়ছে সেখানকার আমজনতার ওপর। সারাদিন আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁদের। অনেকে বলছেন বাড়ির কেউ রাস্তায় বার হলে বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত চিন্তা থাকছে। কাজকর্ম লাটে উঠেছে। স্বাভাবিক জীবনের ছন্দই হারিয়ে ফেলেছেন তাঁরা। দ্রুত শান্তি চাইলেও হচ্ছে কই!
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বোমা, গুলির লড়াইয়ের জেরে কাঁকিনাড়া, ভাটপাড়া এলাকা জুড়ে দোকানপাট ছিল বন্ধ। এলাকা ছিল সুনসান। কেউ রাস্তায় বার হওয়ার ঝুঁকিই নেননি। রাস্তায় শুধু পুলিশের দেখা মিলেছে। রাস্তায় যান চলাচলও ছিল বন্ধ। সব মিলিয়ে গোটা এলাকা অঘোষিত কার্ফুর চেহারা নেয়। এই অবস্থায় হাঁপিয়ে উঠেছেন স্থানীয়রা। তাঁরা দ্রুত এই চরম অশান্ত পরিবেশ থেকে মুক্তি চাইছেন।