দিঘার সমুদ্রে স্নান করতে অনেকেই ছুটে আসেন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। তেমনভাবেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থানার কামালগাজি থেকে গিয়েছিলেন এক দম্পতি। সঙ্গে ছিল ৫ বছরের ছেলে। গাড়ি নিয়েই দিঘায় গিয়েছিলেন তাঁরা। দিঘায় পৌঁছে দম্পতি গাড়ি থেকে নেমে পড়েন সমুদ্রে স্নান করতে। ছেলেকে রেখে যান গাড়িতে। গাড়ির চালকের জিম্মায় ছেলেকে রেখে দম্পতি নেমে পড়েন সমুদ্রে। স্নানের আনন্দে মেতে ওঠেন তাঁরা।
বেশ কিছু পরে আশপাশের লোকজন দেখেন একটি বন্ধ গাড়ির মধ্যে একটি শিশু বাঁচার জন্য হাঁকপাঁক করছে। এদিকে গাড়ি বন্ধ। কাচ তোলা। ফলে তাঁরা দ্রুত পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে গাড়ি কার তা বুঝতে না পেরে অবশেষে ওই শিশুটিকে বাঁচানোর জন্য গাড়ির কাচ ভেঙে ফেলে। ভিতরে তখন দম বন্ধ হয়ে মারা যাওয়ার উপক্রম হয়েছে শিশুটির। তাকে গাড়ির মধ্যে থেকে বার করে এনে জল খাওয়ানো হয়। তারপর সে আস্তে আস্তে সুস্থ হয়।
এতকিছু যে তাঁদের সন্তানের সঙ্গে হয়ে গেছে তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি সেলিম ও তাঁর স্ত্রী নাজমা বিবি। তাঁরা সমুদ্রস্নান সেরে যখন গাড়ির কাছে ফেরেন তখন সেখানে বহু মানুষের ভিড়। শিশুটিকে নিয়ে বসে আছেন পুলিশকর্মীরা। বাবা-মায়ের এমন হুঁশজ্ঞানহীন আচরণে ততক্ষণে তাঁদের ওপর চরম ক্ষেপে মানুষজন। ফলে সেলিম ও নাজমা বিবি সেখানে আসতেই তাঁদের ঘিরে ধরে কড়া ভাষায় আক্রমণ শুরু করেন সাধারণ মানুষ।
জনতার ক্ষোভের হাত থেকে তাঁদের ২ জনকে বাঁচিয়ে পুলিশ সেলিম ও নাজমা বিবিকে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে সেলিম দাবি করেন, তাঁদের সন্তানের শরীরটা ভাল ছিলনা। তাই তাকে নিয়ে সমুদ্রে নামতে চাননি তাঁরা। চালকের জিম্মায় তাকে রেখে স্বামী-স্ত্রী সমুদ্রে নামেন। এদিকে গাড়িতে অধৈর্য হয়ে ছেলেটি হৈচৈ শুরু করতে সেলিম ও নাজমা বিবিকে সমুদ্রের ধারে খুঁজতে গাড়িতে তালা দিয়ে চলে যান চালক। গাড়িতে বন্দি অবস্থায় পড়ে যায় শিশুটি।