রাজ্যের গর্বের তথ্য প্রযুক্তি তালুক সেক্টর ফাইভ ভারী বৃষ্টিতে বানভাসি হয়। এটা অনেকেই জানেন। তাহলে এটা অনুমেয় যে শুক্রবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির পর শনিবার রাত ও সকালের তুমুল বর্ষণ সেখানকার কী পরিস্থিতি করে থাকতে পারে। হয়েছেও তাই। গোটা সেক্টর ফাইভ এদিন জলের তলায় চলে যায়। কোমর ছাড়িয়েও অনেক জায়গায় জল উঠেছে। টাল সামলে জল ভেঙে হাঁটাও মুশকিল হয়েছে। সেক্টর ফাইভের পিছনের দিকের ঝিলগুলিও উপচে গেছে। কোথাও রাস্তা দেখা যায়নি এদিন। শুধু জল আর জল। ওয়েবেল থেকে কলেজ মোড় কোথাও জল ছাড়া রাস্তা উঁকি দেয়নি। জল জমেছে নিক্কো পার্কের সামনেও। সল্টলেকের অনেক জায়গাতেই এদিন জল দাঁড়ায়। সল্টলেকের নতুন মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী এদিন নিজে রাস্তায় বার হয়ে নিকাশি বন্দোবস্ত ও সাফসাফাই খতিয়ে দেখেন।
সল্টলেকের পাশাপাশি এদিন হাওড়াও ভেসেছে জলে। হাওড়ার বহু রাস্তা জলের তলায় চলে যায়। চরম সমস্যার শিকার হন মানুষজন। অনেকে বাড়ি থেকে বার হতেই পারেননি। বাড়ির সামনে কোমর ছাড়ানো জল। অনেক বাড়িতেও জল ঢুকে যায়। দ্রুত জল সরাতে ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন। তবে শর্ত ছিল একটাই। আর বৃষ্টি হলে হবে না। গঙ্গায় জোয়ার থাকলে কলকাতার মত হাওড়ার জলও নামতে সময় লাগে। সেই সমস্যাও ছিল এদিন সকালে।
উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও প্রবল বৃষ্টির জেরে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়। উত্তর ২৪ পরগনার বিটি রোড সংলগ্ন অনেক এলাকা জলের তলায় চলে যায়। এমনকি বিটি রোডের মত রাস্তার চেহারাও ছিল বানভাসি। টবিন রোড থেকে শুরু করে ব্যারাকপুর পর্যন্ত বিটি রোড সংলগ্ন অনেক জায়গায় জমা জল ঢেউ তুলেছে। আশপাশের পাড়গুলির অবস্থা ছিল শোচনীয়। অনেক বাড়ি বা স্কুলে জল ঢুকে যায়। অশোকনগর এলাকাতেও অনেক বাড়িতে জল ঢুকে যায়। যশোর রোডের আশপাশের অনেক এলাকাই এদিন ছিল জলের তলায়। বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা বন্ধ না হলেও বিঘ্নিত হয়। অনেক বিমান ওঠানামা করেছে বিলম্বে।
বানভাসি দক্ষিণ ২৪ পরগনাও। বাসন্তী থেকে সোনারপুর, ডায়মন্ডহারবার থেকে ক্যানিং। বহু ব্লকই জলের তলায় চলে গেছে। গ্রামের পর গ্রামে জল ঢুকে গেছে। পুকুর, ঝিল গেছে উপচে। গ্রামের অনেক পরিবার জলের মধ্যেই জীবনযাত্রা চালাচ্ছেন। গত রাত থেকেই এসব এলাকায় জল বাড়তে শুরু করে। বৃষ্টি যত তোড় বাড়িয়েছে। ততই এসব এলাকা জলের তলায় চলে গেছে। বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাতেও। সেখানেও অনেক এলাকাই জলে ডুবেছে। উত্তরবঙ্গেও এই ঘূর্ণাবর্তের জেরে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে।