‘সিঙ্গুর থেকে নবান্ন চলো’, রাজ্যে শিল্প ও কর্মসংস্থানের দাবিতে বাম ছাত্র যুব সংগঠনগুলির ডাকে গত বৃহস্পতিবার ডানকুনি থেকে মিছিল হয়। শুক্রবার মিছিল ছিল হাওড়া স্টেশনের কাছ থেকে। সেইমত মিছিল শুরুও হয়। তারপর তা মল্লিক ফটকের কাছে আসতে তাদের পথ আটকায় পুলিশ। ইস্পাতের দেওয়াল দিয়ে পথ আটকানো হয়। সেই দেওয়াল সরিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন বাম ছাত্র যুবরা। পাল্টা পুলিশও তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করে। এই পরিচিত দৃশ্য অনেক আন্দোলনেই আগে দেখা গেছে। কিন্তু তারপর যা হল তা কার্যত ধুন্ধুমার।
এসএফআই, ডিওয়াইএফআই সহ বিভিন্ন বাম সংগঠন এদিনের নবান্ন অভিযানে অংশ নিয়েছিল। বাম ছাত্র-যুব সংগঠনের সদস্যরা পুলিশকে সরিয়ে জোর করে যাওয়ার চেষ্টা প্রবল করতে পুলিশ পাল্টা লাঠিচার্জ শুরু করে। অন্যদিকে আন্দোলনকারীরা ইট বৃষ্টি করতে থাকে। শুরু হয় ধুন্ধুমার। আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে এদিন প্রবল লাঠিচার্জ করতে থাকে পুলিশ। ছোঁড়া হয় জল কামান। তারপরও আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোঁড়ে পুলিশ। পিছু হঠেও পিছু হঠতে চায়নি বাম ছাত্র যুবরা। বরং পাল্টা পুলিশের দিকে অজস্র ইটবৃষ্টি করতে থাকে তারা। পুলিশের বেশ কয়েকজনের গায়ে লাল রঙ ছোঁড়া হয়।
বাম ছাত্র যুবদের ছোঁড়া ইটে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হন। তাঁদের দ্রুত হাওড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে পুলিশের প্রবল লাঠিচার্জে এদিন অনেক আন্দোলনকারীও আহত হন। তাঁদের সহ আন্দোলনকারীরাই চ্যাংদোলা করে তুলে অ্যাম্বুলেন্সে তোলেন। কারও বুকে আঘাত লেগেছে। কারও পায়ে। কারও মাথা ফেটেছে। কেউ প্রায় অচেতন। এদিন দুপুরে একে একে অ্যাম্বুলেন্স হাওড়া হাসপাতালের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে আর তার মধ্যে থেকে বার করে আনা হয়েছে আহত ছাত্র যুবদের। স্থানাভাবে, স্ট্রেচারের অভাবে অধিকাংশ আহতেরই প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয় হাসপাতালের মেঝেতে।
আন্দোলনে সামিল অনেক মহিলা কর্মীও আহত হন। অনেকের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। রাস্তায় বসেই অনেককে কাতরাতে দেখা যায়। অন্যরা জল ঢেলে বা জল খাইয়ে তাঁদের সুস্থ করার চেষ্টা চালাতে থাকেন। মহিলাদেরও কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রচুর পুলিশকর্মী দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলে। বাম ছাত্র যুব সংগঠনগুলির অনেক নেতাও এদিন আহত হন। ইদানিংকালে বাম ছাত্র যুব সংগঠনের এত বড় আন্দোলন এবং এমন রণক্ষেত্র চেহারা বড় একটা চোখে পড়েনি।