সোমবার রাজ্যের ৩টি বিধানসভা কেন্দ্রে ছিল উপনির্বাচন। কালিয়াগঞ্জ, করিমপুর ও খড়গপুর সদর। এই ৩ কেন্দ্রে এদিন সকাল থেকেই ভোটদানের উৎসাহ নজর কেড়েছে। অনেক বুথেই সকাল থেকে লাইন পড়ে। তার মধ্যেই অবশ্য টুকটাক অশান্তির খবর আসতে থাকে। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ সামনে আসতে থাকে। এদিন দিনের সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটে নদিয়ার করিমপুরে। সেখানে ঘিয়াঘাট এলাকায় বেশ কয়েকজনের হাতে মার খান বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদার। তাঁকে প্রকাশ্যে কিল, চড়, ঘুষি, লাথি মারা হয়। সে বিষয় ক্যামেরাবন্দিও হয়েছে। বিজেপি এই ঘটনার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানিয়েছে। পুলিশের কাছেও ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। এছাড়াও এদিন করিমপুরে টুকটাক ঝামেলার খবর এসেছে।
কালিয়াগঞ্জে বিজেপি প্রার্থী কমল চন্দ্র সরকারকে এদিন তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে ইভিএম পর্যন্ত যেতে দেখা যায়। সেখানে স্ত্রীকে ইভিএম-এ কিছু দেখানোরও চেষ্টা করেন তিনি। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানানো হয়। একজন প্রার্থী হয়ে তিনি বিধিভঙ্গ করেছেন বলে দাবি করার পাশাপাশি এটা মেনে নেওয়ার জন্য প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধেও নালিশ জানানো হয়। কমিশন পরে ওই প্রিসাইডিং অফিসারকে সরিয়ে দেয়। অন্যদিকে বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে পূর্ব গোয়ালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটগ্রহণের সময় সেখানে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরা হানা দেয়। বিজেপির দাবি, ওই দুষ্কৃতিরা ভোটারদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। বুথ দখল করে।
খড়গপুর সদরেও এদিন উপনির্বাচন ছিল। খুব শান্তিতে যে এখানে পুরো ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হয়েছে এমনটা নয়। এখানে ১৪০ নম্বর বুথে বিজেপির পোলিং এজেন্ট দাবি করেন একটি আয়নার কাছে এমনভাবে ইভিএম রাখা হয়েছে যাতে বোঝা যায় যে ভোট কোথায় পড়ছে। এই অভিযোগ সামনে আসার পর দ্রুত ওই আয়না চাদর দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। খড়গপুর কলেজে বুথ জ্যাম করার অভিযোগও সামনে এসেছে। কংগ্রেস নেতা শুভঙ্কর সরকার অভিযোগ করেন খড়গপুরে বিজেপিকে সমর্থন করছে কেন্দ্রীয়বাহিনী। তৃণমূলকে সমর্থন করছে পুলিশ। তাহলে অন্য দলের সমর্থকেরা কী সুরক্ষা পাবেন।
খড়গপুর সদরে এদিন বিকেল পর্যন্ত ভোট পড়ে ৬৭ শতাংশ। করিমপুরে ভোট পড়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৮১ শতাংশ। কালিয়াগঞ্জে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৭৭ শতাংশ। অত্যন্ত ভাল ভোট পড়েছে ৩ কেন্দ্রেই। অর্থাৎ মানুষ ভোট দিয়েছেন। যা গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ ইঙ্গিত। প্রসঙ্গত খড়গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক ছিলেন দিলীপ ঘোষ ও করিমপুরের তৃণমূল বিধায়ক ছিলেন মহুয়া মৈত্র। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনে ২ জনই সাংসদ হয়েছেন। ফলে এখানে উপনির্বাচন হচ্ছে। অন্যদিকে কালিয়াগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক প্রথমনাথ রায়ের অকাল প্রয়াণের পর এখানেও উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হল এদিন।