গত ৩ জানুয়ারি নৈহাটিতে একটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়। সে বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ভয়ংকর ছিল যে আশপাশের অনেক বাড়ির ক্ষতি হয়। প্রশ্ন ওঠে বাজির মশলার এত শক্তি হয় কী? সেই ঘটনায় ৪ জনের মৃত্যুও হয়। তারপর থেকেই নৈহাটি সহ আশপাশের এলাকার যত বেআইনি বাজি কারখানা রয়েছে, সেখানে পুলিশ হানা দিচ্ছে। বাজেয়াপ্ত করছে বাজির মজুত মশলা। তারপর তা নিষ্ক্রিয় করে দিচ্ছে। নিষ্ক্রিয় করা মানে বাজির মশলা জ্বালিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। সে কাজই হচ্ছিল এদিন। আর ঠিক সেই সময় বাজির মশলা এমন ভয়ংকর তীব্রতায় ফাটে যে গঙ্গার এপার ওপার থর থর করে কেঁপে ওঠে। ভেঙে যায় দূরের দূরের বাড়ির কাচ। উড়ে যায় চাল। বাড়িতে ফাটল ধরে যায়।
কাছেই জুবিলি ব্রিজ। তার কাছেই নৈহাটির রামঘাট। গঙ্গার এই ঘাটের কাছেই একটি ফাঁকা জায়গায় বাজির মশলা এক জায়গায় করে এদিন পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। আর তখনই ঘটে বিপত্তি। আগুন দিতেই এক প্রবল বিস্ফোরণ হয়। যে ধোঁয়ার কুণ্ডলী বিস্ফোরণের পর আকাশের দিকে উড়ে যায় তা আলাদা করে দেখলে যুদ্ধের সময় কোনও বড়সড় বোমা পড়েছে বলে ভ্রম হতেই পারে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের বুক কেঁপে ওঠে আতঙ্কে। অনেক বাড়ির ক্ষতি হয়।
ঘটনার পর সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ আছড়ে পড়ে। পুলিশের ২টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তাতে আগুন দেওয়া হয়। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর এসে মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও তাঁরা এমন কাণ্ড মানতে চাননি। সকলের বক্তব্য, পুলিশের আগে আন্দাজ করা উচিৎ ছিল জনবসতি থাকা এলাকায় এত ভয়ংকর বিস্ফোরণ হতে পারে। তাই সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। তাঁদের আরও প্রশ্ন, বাজির মশলা থেকে এই বিস্ফোরণ হয়? পুলিশ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।