কারও পরিবারে সন্তান জন্মালে সে খবর ঠিকই পৌঁছে যায় বৃহন্নলাদের কাছে। কদিনের মধ্যেই বাড়িতে হাজির হন তাঁরা। শিশুকে আশির্বাদ করে টাকা, পোশাক ও অন্যান্য সামগ্রি চান গৃহস্থের কাছে। সন্তান জন্মের পর এই রীতি বহুদিন ধরেই চলে আসছে। যা আজও বহমান। অনেক ক্ষেত্রে বৃহন্নলারা শিশুকে কোলে করে আদরও করেন। নাচানাচিও করেন।
সব পরিবার যে তাতে খুব আপত্তি জানায় তাও নয়। কিন্তু এক্ষেত্রে জানিয়েছিল। পরিবারের তরফে জানানো হয়েছিল সদ্যোজাত সন্তানের শারীরিক পরিস্থিতি ভাল নয়। তাই তাকে নিয়ে নাচানাচি করা যাবেনা। অভিযোগ কথা শোনেননি বৃহন্নলারা। কার্যত পরিবারের কোল থেকে তুলে নিয়ে শিশুটিকে নিয়ে নাচানাচি, গান-বাজনা শুরু করেন তাঁরা।
বৃহন্নলারা এমনটা শুরুর একটু পরেই শিশুটির শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। দ্রুত তাকে নিয়ে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে ছোটেন। সেখানে শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। গত ১৩ ডিসেম্বর জন্ম নিয়েছিল শিশুটি। তার হৃদযন্ত্রের সমস্যা ছিল। হাসপাতালে সে কারণে ভর্তিও ছিল। ৩ সপ্তাহ হয়েছে তাকে হাসপাতালে থেকে ছাড়া হয়েছে। কিন্তু বাড়িতে খুব সাবধানে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। সেভাবেই বাবা-মা-পরিবার রেখেছিলেন। কিন্তু বৃহন্নলাদের এমন কাণ্ডে শেষ হয়ে গেল শিশুর জীবন।
শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঝাড়গ্রামে শিলদা এলাকায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরিবারের তরফে ৩ জন বৃহন্নলার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ৩ বৃহন্নলাকে গ্রেফতারও করেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। পরিবারের নতুন অতিথিকে এভাবে হারিয়ে পরিবার এখন শোকে কথা বলার মত শক্তিও হারিয়েছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা