২ যুবকের অসীম সাহসিকতায় অনিবার্য মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরলেন মহিলা
নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন তিনি। অবশ্যই যার পুরো কৃতিত্ব অসীম সাহসী ২ যুবকের প্রাপ্য।
কলকাতা : উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। মাঝে পরিস্থিতি শোচনীয় হলেও সেখান থেকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে উত্তরবঙ্গ। কিন্তু বৃষ্টির হাত থেকে রেহাই মিলছে না। রেহাই মিলছে না ভুটান পাহাড়ের বৃষ্টির জল থেকে। হুহু করে উত্তরবঙ্গের নদীগুলির জলস্ফীতির কারণ হচ্ছে ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা বিপুল পরিমাণ জল। যা অনেক নদীতে আচমকা হড়পা বান ডেকে আনছে। চোখের নিমেষে বেড়ে যাচ্ছে নদীর জল। যেমনটা হল জলপাইগুড়ির নাগরাকাটার হাটখোলা গ্রামে। এই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কুচি ডায়না নদী। সেখানেই এই হড়পা বানের জেরে এক হাড় হিম করা ঘটনা ঘটে গেল।
নদীর ধারেই কাপড় কাচছিলেন স্থানীয় এক মহিলা। আচমকাই নদীর জল দ্রুত বাড়তে থাকে। যতক্ষণে ওই মহিলা বুঝতে পারেন যে হড়পা বানের জেরে নদী দ্রুত রূপ বদলাচ্ছে ততক্ষণে তিনি চারপাশ দিয়ে জলে ঘেরা হয়ে গেছেন। শুধু জলে ঘেরাই নয়, অতি দ্রুত তাঁর চারপাশে জল বাড়ছে। রয়েছে প্রবল স্রোত। যা স্রোত রয়েছে তা তাঁকে চোখের নিমেষে ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট।
ওই মহিলার বুঝতে অসুবিধা হয়নি মৃত্যু তাঁর দরজায় এসে দাঁড়িয়েছে। তিনি চিৎকার করতে থাকেন। ওই মহিলার চিৎকার কানে যায় নদীর কাছেই থাকা ২ যুবকের। তাঁরা আওয়াজ অনুসরণ করে এসে দেখেন ওই মহিলা মৃত্যুর মুখে। সময় নষ্ট না করে তাঁরা ২ জনে একটি দড়ি জোগাড় করেন। তারপর ঝাঁপিয়ে পড়েন ওই হড়পা বানের জলে ফুলে ফেঁপে ভয়ংকর চেহারা নেওয়া কুচি ডায়না নদীর জলে। প্রবল স্রোতের সঙ্গে লড়াই করে তাঁরা পৌঁছে যান ওই মহিলার কাছে। তারপর তাঁকে নিয়ে আসেন নদী পাড়ে।
প্রাণে বেঁচে যান ওই মহিলা। যদিও তিনি মানসিক দিক থেকে এখনও সুস্থ অবস্থায় ফিরতে পারেননি। এদিকে এই ঘটনার কথা চাপা থাকেনি। গোটা গ্রাম তো বটেই, ওই ২ যুবকের সাহসিকতার কথা এখন ঘুরছে জলপাইগুড়ি জুড়ে। খবর ছড়িয়েছে অন্যত্রও। সকলেই ওই ২ যুবকের জীবনের ঝুঁকি নেওয়া সাহসিকতা নিয়ে উচ্ছ্বসিত।