পেটের দায়ে সন্তানকে ৪ হাজার টাকায় বেচলেন দম্পতি
কথায় বলে পেটের দায় বড় দায়। সেই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে দুধের সন্তানকে ৪ হাজার টাকায় বেচে দিলেন দম্পতি।
কলকাতা : দুধের শিশুকে বেচে দিলেন দম্পতি। খিদের জ্বালা সহ্য করতে না পেরেই এমন কাজ করতে হয়েছে তাঁদের। এমনই জানিয়েছেন তাঁরা। করোনার জেরে লকডাউন শুরু হয় দেশে। যা বহু মানুষের রুজি কেড়ে নেয় অচিরেই। সেই দলে পড়ে যান এই দম্পতি।
পূর্ব মেদিনীপুরের হরিজন পল্লির বাসিন্দা এই দম্পতির ঘরে আসে এক কন্যা সন্তান। ঠিক লকডাউন শুরুর কিছুদিন আগেই। তারপর দেশ জুড়ে লকডাউন কেড়ে নেয় তাঁদের রুজির সংস্থান।
যেটুকু ঘরে টাকা রাখা ছিল তাও এতদিনে শেষের পথে। চরম অর্থাভাব ক্রমশ বাড়তে থাকে সংসারে।
অর্থাভাবের গ্রাসে দুবেলা দুমুঠো খাবার সংস্থানটুকুও হারাতে থাকে। দারিদ্রের গ্রাস যেন ক্রমশ গিলতে থাকে এই পরিবারকে। এদিকে ছোট্ট কন্যা সন্তান ৮ মাসে এসে ঠেকে। এই অবস্থায় আর সম্ভব হয়নি তাঁদের পক্ষে সংসার চালানো বলে দাবি করেছেন ওই দম্পতি।
তার জেরে এক ব্যক্তির কাছে মাত্র ৪ হাজার টাকার বিনিময়ে তাঁরা বেচে দেন তাঁদের ৮ মাসের সন্তানকে। পেটের টান থেকে বাঁচতেই তাঁরা একাজ করেন বলে জানান ওই দম্পতি।
ভাই তাঁর দুধের শিশুকে বেচে দিয়েছেন। এ খবর পৌঁছয় দাদার কাছে। তিনি তখনই খোঁজ নিতে শুরু করেন কার কাছে ওই শিশুকে বিক্রি করা হয়েছে। জেঠু হিসাবে তিনি এরপর উদ্যোগী হন শিশুটিকে ফেরত আনার।
তিনি যোগাযোগ করেন ওই ব্যক্তির সঙ্গে। ওই ব্যক্তিকে ৪ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে সন্তানকে ফেরত আনেন তিনি। তবে আর সেই শিশুকে ভাইয়ের হাতে তুলে দেননি। নিয়ে যান স্টেট চাইল্ড ওয়েলফেয়ার ডিপার্টমেন্টে।
তারা ওই শিশুটিকে গ্রহণ করে তাকে নিয়ে যায় মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর গার্লস হোমে। সেখানেই আপাতত ঠাঁই হয়েছে ওই দুধের শিশুটির।
এদিকে এভাবে শিশু সন্তানকে বেচে দেওয়ার জন্য ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সরকার থেকে নানা সংগঠন করোনা পরিস্থিতিতে কেউ যেন না খেয়ে রাতে শুতে না যান তার জন্য বিনামূল্যে খাবার তুলে দেওয়া হয়েছে। তাও তাঁরা কীভাবে খাবারের অভাবে ভুগছিলেন তাও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।