লকগেট ভেঙে বেরোনো দামোদরের জলে বন্যার ভ্রুকুটি
ব্যারেজের লকগেট ভেঙে হুহু করে বেরিয়ে যাচ্ছে দামোদর নদের জল। একটানা অপ্রতিরোধ্যভাবে বেরিয়ে যাওয়া জলের স্রোতে তৈরি হয়েছে বন্যার আশঙ্কা।
দুর্গাপুর : শুক্রবার রাতেই ভেঙে যায় ধাতুর তৈরি লকগেট। দামোদর নদের ওপর তৈরি দুর্গাপুর ব্যারেজের ৩১ নম্বর লকগেট ভেঙে যাওয়ার খবর রাতেই রাজ্যের সেচ দফতরের উচ্চপদস্থ কর্তাদের কানে পৌঁছয়। রাতেই ছুটে আসেন অনেক আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়াররা।
কিন্তু যেভাবে লকগেট ভেঙে জল হুহু করে বেরোচ্ছে তাতে লাগাম দেওয়া কার্যত দুঃসাধ্য ছিল। শনিবার সকালেও পরিস্থিতি একই। জল যেমনকার তেমন বেরিয়ে যাচ্ছে।
৩১ নম্বর লকগেটের ধাতব পাত ভেঙে গেছে। সেখান দিয়েই জল বেরিয়ে যাচ্ছে তোড়ে। ইঞ্জিনিয়াররা মেরামতির চেষ্টা চালালেও জলের এই ধারা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে মেরামতি কার্যত অসম্ভব বলে মনে করছেন অনেক ইঞ্জিনিয়ার। ফলে আতঙ্কের পারদ চড়ছে।
দ্রুত মেরামতি করা গেলে হয়তো যে টুকু জল বেরিয়েছে তাতে বড়সড় কোনও ক্ষতি হত না। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি তাতে আশপাশের গ্রামগুলিতে চিন্তার ভাঁজ পুরু হচ্ছে।
এভাবে যদি জল বার হতেই থাকে তাহলে বেশ কিছু গ্রামে প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে সেখানকার বাসিন্দারা রীতিমত চিন্তায় রয়েছেন। এদিকে দুর্গাপুর মূলত শিল্পাঞ্চল এলাকা। শিল্পাঞ্চলকে সামনে রেখেই দুর্গাপুর এখন এ রাজ্যের অন্যতম প্রধান শহর। সাজানো শহরে বহু মানুষের বাস। ফলে সেখানে পানীয় জলের সংকট দেখা দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
তাছাড়া বড় সমস্যা হতে পারে এখানকার কলকারখানায়। কারণ কারখানায় প্রচুর জলের প্রয়োজন হয়। প্রাত্যহিক সেই জলের সরবরাহ হয় এই ব্যারেজ থেকে। কিন্তু তাই এখন ভাঙা গেটের কারণে স্তব্ধ। ফলে সেখানেও কাজকর্ম আটকে যেতে পারে।
১৯৫৫ সালে দামোদর নদের ওপর স্থাপিত হয় দুর্গাপুর ব্যারেজ। ব্যারেজটি ৬৯২ মিটার লম্বা। রয়েছে ৩৪টি গেট। তারই ৩১ নম্বর গেটে ফাটল তৈরি হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব এই জল বার হওয়া বন্ধ করে লকগেট মেরামতির চেষ্টা চলছে। তবে পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে দুর্গাপুর শহরের মানুষের চিন্তার ভাঁজ পুরু হয়েছে।