ছেলেমেয়েদের স্কুলে ফেরাতে গ্রামে গ্রামে গান গেয়ে বেড়াচ্ছেন কবিয়াল
গত ২টো বছর অনেক কিছুই তো কেড়ে নিয়েছে। অনেকে পড়ুয়ার জীবন থেকে পড়াশোনাটাও। সেখানেই আবার তাদের ফেরত আনতে গ্রামে গ্রামে গান গেয়ে বেড়াচ্ছেন কবিয়াল।
জীবনের অনেকগুলো বছর তিনি দিয়ে দিয়েছেন বাংলার কবিগানকে বাঁচাতে। সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতকে বাংলার কবিগান তার নিজের জায়গা তৈরি করেছিল। পেয়েছিল জনপ্রিয়তা।
সরল ভাষায় ছোট ছোট কবিতা গান হয়ে ভেসে বেড়াত নগর গ্রামের আকাশে বাতাসে। বলত জীবনের কথা। আধুনিক যুগে সেই হারাতে বসা কবিগানকেই এবার ছোটদের স্কুলে ফেরানোর হাতিয়ার করলেন কবিয়াল গণেশ ভট্টাচার্য।
গত ২ বছরে স্কুল ছিল বন্ধ। সে সময় বহু পড়ুয়া স্কুল ছুট হয়ে গিয়েছে। কারও পরিবার পড়েছে চরম দারিদ্রের মুখে, কারও পক্ষে মোবাইল কিনে অনলাইন ক্লাস সম্ভব হয়নি।
ফল হয়েছে স্কুল খোলার পরও তারা আর স্কুলে ফেরেনি। এবার তাদের স্কুলে ফেরাতে কোমর বেঁধে নামলেন কবিয়াল গণেশ।
তিনি কবিগান বেঁধেছেন স্কুলে ফেরার বার্তা নিয়ে। কখনও সেই গানে উঠে আসছে কালিদাসের কাহিনি। কখনও পুরাণের কাহিনি।
কবিয়ালের মতে, গ্রামের মানুষ পরিশীলিত ভাষার প্রয়োগ বোঝেন না। তাঁরা বোঝেন তাঁদের উচ্চারণে, তাঁদের মত করে বলা ভাষা। তাই তাঁদের পর্যন্ত পৌঁছতে ঠিক সেই ভাষাতেই গান গাইছেন কবিয়াল গণেশ।
গ্রামে গ্রামে ঘুরে আপ্রাণ লড়াই চালাচ্ছেন গত ২ বছরে যেসব পড়ুয়া স্কুল ছুট হয়েছে তাদের স্কুলে ফেরাতে। পড়াশোনার আঙিনায় ফেরাতে।
আপাতত বাঁকুড়ার গ্রামে গ্রামে কবিয়াল গণেশ ভট্টাচার্য গেয়ে বেড়াচ্ছেন স্কুলে ফেরার গান। তাঁর এই উদ্যোগ সর্বত্র প্রশংসা পাচ্ছে।