নবমীর রাত থেকে চলেছে যমে-মানুষে টানাটানি। তবু হাসপাতালের বেডে শুয়ে সর্বশক্তি দিয়ে বেঁচে থাকার লড়াইটা চালিয়ে গেছে ওই কিশোরী। জীবনটা তো সবে শুরু হয়েছিল। ভবিষ্যতের স্বপ্নে বিভোর চোখগুলো চেয়েছিল অনেকদিন বাঁচতে। এই সুন্দর পৃথিবীতে তারও অধিকার কিছু কম নয়। কিন্তু এক যুবকের পৈশাচিক পদক্ষেপে শেষে হয়ে সব স্বপ্ন। অকালেই এ পৃথিবী ছেড়ে, মায়ের কোল ফাঁকা করে বহু দূরে পাড়ি দিল সে।
নদিয়ার হাঁসখালি। নবমীর রাতে ওই কিশোরী আর তার মা রাতে এখানেই তাদের বাড়িতে পাশাপাশি শুয়ে ঘুমচ্ছিল। নিশুতি রাতে আচমকাই ঘুম ভেঙে যায় দুজনের। কিসের ছোঁয়ায় যেন সারা গা জ্বলে যাচ্ছে। দ্রুত গায়ে জল ঢেলে ঠান্ডা করার চেষ্টা করে তারা। কিন্তু ফল হয়নি। জ্বালা ক্রমশ অসহ্য হয়ে উঠতে থাকে। দ্রুত তাদের কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন মা ও মেয়ে। পুলিশ সূত্রের খবর, রাতে ঘুমনোর সময় দরজার সামান্য ফাঁক দিয়ে মা-মেয়ের ওপর অ্যাসিড ছুঁড়ে দেওয়া হয়। সেই অ্যাসিডের জ্বলুনিতেই ঘুম ভাঙে তাঁদের। নবমীর রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ওই কিশোরী আর তার মা দুজনেই হাসপাতালে বাঁচার লড়াই চালিয়ে গেছেন। মা এখনও যুঝতে পারলেও মেয়ে পারল না। মারণ অ্যাসিড কেড়ে নিল তার তরতাজা প্রাণ। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সুমন মণ্ডল নামে মৃত কিশোরীর বান্ধবীর পরিচিত এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অ্যাসিড বিক্রির অভিযোগে সুমনের সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছে আরও একজন। ২ জনকেই ৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।