ধর্ষণের মামলা তুলে নিতে তাঁর ওপর দিনরাত চাপ দেওয়া চলছিল। পুরো এলাকায় তাঁর বদনাম করে বেড়াচ্ছিল জামিনে ছাড়া পাওয়া অভিযুক্তরা। একে গণধর্ষণের শিকার হওয়ার পর থেকে মানসিক দিক থেকে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত ছিলেন তিনি। তারওপর এই চাপ আর সহ্য করতে পারলেন না। সোমবার নিজের ঘরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করলেন বিষ্ণুপুরে গণধর্ষণের শিকার ওই তরুণী। গত ১৩ অক্টোবর দুর্গাপুজোর ভাসান দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ২২ বছরের ওই তরুণী। অভিযোগ তাঁকে বাড়ি ফিরতে সাহায্য করবে বলে তাঁর সঙ্গে নেয় এলাকারই ৩ যুবক। তারপর একটি জঙ্গলঘেরা জায়গায় ধরে নিয়ে গিয়ে ওই যুবতীকে গণধর্ষণ করে তারা। এত অত্যাচার সহ্য করেও পুলিশের কাছে নির্ভয়ে সব জানান ওই তরুণী। সংবাদমাধ্যমকে জানান তিনি শুধু দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চান। ঘটনার ৪ দিনের মাথায় অভিযুক্ত শুধেন্দু পাল ও কার্তিক জানাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১০ দিন আগে জামিনে মুক্তি পায় শুধেন্দু। তারপর থেকেই ওই তরুণীকে চাপ দেওয়ার পর্ব শুরু হয়। তরুণীর পরিবারের দাবি, পুলিশকে টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে মামলা ধামাচাপা দিয়ে দেবে বলেও দাবি করেছিল শুধেন্দু। সেইসঙ্গে ওই তরুণীকে টাকা দিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার কথাও জানায় সে। কিন্তু অভিযুক্তদের শাস্তির প্রশ্নে অনড় ছিলেন তরুণী। এদিকে প্রতিনিয়ত হুমকি, চাপ বাড়তেই থাকে। ওই তরুণীর সম্বন্ধে শুরু হয় বদনাম ছড়ানো। তরুণীর বাড়িতে এসে শুধেন্দু বলে যায় ওই তরুণীর মরে যাওয়া উচিত। এত চাপ সহ্য করে উঠতে পারেননি ওই নির্যাতিতা। বিষ খেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। ঘটনার পর থেকে বেপাত্তা শুধেন্দু। এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, ধর্ষণের শিকার মহিলাদের সুপ্রিম কোর্ট থেকেই সুরক্ষা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া আছে। তা সত্ত্বেও ওই তরুণীকে কী করে দিনের পর দিন এভাবে চাপ দিতে পারল শুধেন্দু? কী করছিল পুলিশ!