মঙ্গলবারের মত রক্তক্ষয়ী অশান্তি নেই। তবে বুধবার সকাল থেকেই থমথমে ভাঙড়ের পদ্মপুকুর, খামারহাটি সহ বেশ কিছু আশপাশের এলাকায় গাছের মোটা মোটা গুঁড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ করা হয়। কেউ যাতে গ্রামে না ঢুকতে পারে তার বন্দোবস্তও করা হয়। গ্রামগুলোতেও ছিল চাপা উত্তেজনা। বেলা বাড়লে সেখানে হাজির হতে থাকেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম ও বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন। যান মৃত গ্রামবাসীদের বাড়িতেও। গোটা ঘটনার তদন্তের দাবি করেন তাঁরা। একই দাবি জানিয়ে এসেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান তিনি। পরে সেখানে হাজির হন তৃণমূল নেতা মুকুল রায় ও সব্যসাচী দত্ত। কথা বলেন ভাঙড়ের মানুষজনের সঙ্গে। পরে মুকুলবাবু জানান, গ্রামবাসী না চাইলে ওখানে পাওয়ার গ্রিড হবে না। পাশাপাশি তাঁর দাবি, ভাঙড়ের অশান্তির পিছনে কিছু বহিরাগতের মদত রয়েছে। তারাই বিভ্রান্ত করেছে গ্রামবাসীদের। কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি কাজ করছে বলেও দাবি করেন তিনি। আগামী বৃহস্পতিবার বা শুক্রবারের মধ্যে অবস্থা শান্ত হয়ে যাবে বলেও আশ্বস্ত করেন মুকুলবাবু। পাশাপাশি ভাঙড়ে মঙ্গলবার পুলিশ গুলি চালায়নি বলে দাবি করেন তিনি। এদিকে ভাঙড়ের পরিস্থিতি নিয়ে এদিন ভবানীভবনে পুলিশ কর্তা ও সিআইডি কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী। ভাঙড়ে বহিরাগতদের বিরুদ্ধের আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কোনওভাবেই যেন ভাঙড়ের গ্রামবাসীদের গায়ে হাত না পড়ে। এদিকে গত মঙ্গলবারই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু পড়ুয়া ভাঙড় আন্দোলনে যুক্ত বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিল পুলিশ। এদিন সরাসরি ভাঙড়ের উত্তপ্ত গ্রামগুলিতে হাজির হন যাদবপুরের কয়েকজন ছাত্রছাত্রী ও প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনীদের একটি দল। গ্রামের মানুষের পাশে দাঁড়াতেই তাদের আসা বলে জানান তাঁরা। শান্তি ফেরাতে তাঁদের তরফে গ্রামবাসীদের সঙ্গে সরকারের কথা বলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।