সম্ভবত ভাড়াটে খুনি দিয়েই খুন করা হয়েছে তৃণমূল নেতা দুলাল বিশ্বাসকে। এমনই মনে করছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই এই হত্যার তদন্তভার সিআইডিকে সঁপে দেওয়া হয়েছে। গত রবিবার নদিয়ার বগুলার ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তথা হাঁসখালি ব্লকের সভাপতি তৃণমূল নেতা দুলাল বিশ্বাস বগুলায় দলীয় কার্যালয়ে বসেছিলেন। অভিযোগ সেই সময়ে জনা ১০-১২ যুবক পার্টি অফিসে ঢুকে তাঁকে একদম কাছ থেকে গুলি করে পালায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুলালবাবুর। কয়েকজন দুষ্কৃতীদের আটকানোর চেষ্টা করলেও ফল হয়নি। ছুটে তারা রেললাইনের দিকে পালিয়ে যায় বলে দাবি স্থানীয়দের। দুলালবাবুর ছেলের দাবি, এদের অধিকাংশেরই মুখে চাপা ছিলনা। ফলে পালানোর সময়ে তাদের কয়েকজনকে তিনি চিনতে পারেন। সেইভাবে পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেছেন তিনি। এদিকে পুলিশের অনুমান দুষ্কৃতীরা এদিনই প্রথম এলাকায় ঢুকে দুলালবাবুকে খুন করে পালায়, এমনটা নয়। বরং বেশ কয়েকবার তারা পুরো এলাকা ঘুরে দেখেছিল। খুন করে পালানোর সময়ে তাদের কাজ সেই ইঙ্গিতই বহন করছে। কারণ দুষ্কৃতীরা পালানোর জন্য একটি সরু পথ ধরে। সেটি এঁকে বেঁকে ঘরদোরের মাঝখান দিয়ে রেললাইন পর্যন্ত পৌঁছেছে। সেই পথে ছুটে পালানোর সময়ে রাস্তায় কোথাও দোনলা বন্দুক, কোথাও টোটা, কোথাও ব্যাগে ভরা ধারালো অস্ত্র ফেলতে ফেলতে যায়। যে রাস্তায় দিয়ে তারা পালায় সেখান থেকে এগুলি পরে উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে রেললাইনের দিকে পালালেও তারপর সেখান থেকে তারা কোন পথে চম্পট দিল তা পরিস্কার নয়। তদন্তে নেমে ২টি রাস্তা দেখতে পেয়েছে পুলিশ। একটি ট্রেনে চেপে চম্পট দেওয়া অথবা লাইনের ধার ঘেঁষা সুরু পথ দিয়ে হাইওয়েতে পড়ে সেখান থেকে কোনও যানবাহনে পালানো। দুটির যে কোনও একটি পথ ধরেই তারা এলাকা ছাড়ে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। এদিকে এই ঘটনায় সোমবারও বগুলায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে। ঘটনার পিছনে সিপিএম ও বিজেপির হাত রয়েছে বলে তৃণমূলের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও সিপিএম বা বিজেপি দুই দলই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বরং তাদের পাল্টা দাবি এই ঘটনা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। এদিন দুপুরে ঘটনাস্থলে যান পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে শ্রীকৃষ্ণ কলেজ মাঠে প্রতিবাদ ও শোকসভায় যোগ দেন তাঁরা।